ঢাকা, শুক্রবার, ১১ আশ্বিন ১৪৩২, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

ফুটবল

ইসরায়েলকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধের প্রচেষ্টা ঠেকাতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৪৮, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫
ইসরায়েলকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধের প্রচেষ্টা ঠেকাতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র সংগৃহীত ছবি

ইসরায়েলকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টা ঠেকাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য ফিফা বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ওয়াশিংটন এ অবস্থান নিয়েছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের এক তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল ‘গণহত্যা’ চালিয়েছে। এর পর জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্যানেল এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজসহ অনেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্রীড়া নিষেধাজ্ঞার দাবি তুলেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বিবিসি স্পোর্টকে বলেন, ‘আমরা অবশ্যই সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করব যাতে কেউ ইসরায়েল জাতীয় ফুটবল দলকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধ করতে না পারে। ’

ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা শিগগিরই ইসরায়েলকে স্থগিত করার বিষয়ে বৈঠক ডাকার আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে। এক ইউরোপীয় সদস্য দেশের কর্মকর্তার ভাষায়, ‘আমাদের ধারণা, উয়েফার নেতৃত্ব এবার কিছু পদক্ষেপ নিতে চায়। আগের মাসের তুলনায় এখন চাপ অনেক বেড়েছে। ’

ইসরায়েল আগামী ১১ অক্টোবর অসলোতে নরওয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচ খেলবে। নরওয়ের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লিসে ক্লাভেনেস বলেন, ‘আমাদের প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের অংশগ্রহণ মেনে নিতে হলেও গাজার মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে উদাসীন থাকা যাবে না। ’

ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশনও বলেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে ম্যাচ আয়োজন করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাতিসংঘের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত পাঁচটি গণহত্যামূলক কাজের মধ্যে অন্তত চারটি ঘটিয়েছে ইসরায়েল। মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা ফিফা ও উয়েফাকে আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে স্থগিত করতে। তাদের ভাষায়, ‘খেলাধুলা ব্যবসা নয়—এটা দেখাতে হবে। ’

ইসরায়েল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, গাজায় সামরিক অভিযান আত্মরক্ষার অংশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের রিপোর্টকে বলেছে ‘বিকৃত ও মিথ্যা’।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় অভিযান চালায়। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ৪১৯ জন গাজায় নিহত হয়েছে। এ সংখ্যাটিকে জাতিসংঘ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসেবেই উদ্ধৃত করছে।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী সানচেজ বলেছেন, ‘রাশিয়ার মতো ইসরায়েলকেও আন্তর্জাতিক খেলাধুলা থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত। ইসরায়েল যেন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিজেদের ভাবমূর্তি শুদ্ধ করতে না পারে। ’

ইতোমধ্যে ইউরোপজুড়ে প্রতিবাদ বাড়ছে। গ্রীসের ক্লাব পিএওকে-র সমর্থকরা ইউরোপা লিগে ইসরায়েলি ক্লাব মাকাবি তেলআবিবের বিপক্ষে ম্যাচে ‘স্টপ দ্য জেনোসাইড’ এবং ‘শো ইসরায়েল দ্য রেড কার্ড’ লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন। গ্যালারিতে শোনা যায় ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগানও।

এদিকে উয়েফার কাছে জমা পড়েছে একটি পিটিশন, যাতে বলা হয়েছে ‘গণহত্যার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনো ন্যায্য খেলা সম্ভব নয়। ’

রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিল। এবার ইসরায়েলকেও একই পথে ঠেলে দেওয়ার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।