ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

প্রার্থীর ব্যয়সীমা ২৫ লাখ টাকা, দলের সাড়ে ৪ কোটি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
প্রার্থীর ব্যয়সীমা ২৫ লাখ টাকা, দলের সাড়ে ৪ কোটি

ঢাকা: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার কাজ শুরু হয়ে গেছে। সেইসঙ্গে শুরু হয়ে গেছে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের প্রচারণা ব্যয়ও। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। আর রাজনৈতিক দল সর্বোচ্চ ব্যয় করতে পারবে সাড়ে চার কোটি টাকা। এই ব্যয়টা করতে হবে একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যয়সীমার মধ্যেই প্রার্থী ও দলকে থাকতে হবে। অন্যথায় জেল-জরিমানা হতে পারে।


 
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, সে দল সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারে। সর্বোচ্চ ১০০ প্রার্থীর জন্য দেড় কোটি টাকা করা যায়। সর্বোচ্চ ২০০ প্রার্থীর জন্য তিন কোটি টাকা এবং ২০০’র বেশি প্রার্থী দিলে সংশ্লিষ্ট দল সর্বোচ্চ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারবে।
 
এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারবে। কারণ, এই তিনটি দলের প্রার্থী রয়েছে ২ শতাধিক, যথাক্রমে ২৫৮, ২৪২ ও ২৯০। আর জাতীয় পার্টি ব্যয় করতে পারবে তিন কোটি টাকা। দলটির প্রার্থী রয়েছে ১৭৪ জন।
 
দলগুলো চাঁদা ও অনুদানসহ অন্যান্য খাত থেকে আয় করতে পারে। তবে নির্বাচনে ব্যয় করতে হয় নির্ধারিত খাতে। এগুলো হলো দলীয় প্রধানের ভ্রমণ, পোস্টার, প্রচার কাজের জন্য ব্যয়।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৪৪ সিসিসি-বিধি অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পর ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এটা অমান্য করলে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।
 
এবার সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর ভোটারপ্রতি গড় ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১০ টাকা। প্রার্থী এই ব্যয় করবেন তার এজেন্টের মাধ্যমে। তবে কোনো আসনের ভোটার সংখ্যার আধিক্যের কারণে মোট ব্যয় ২৫ লাখ টাকার বেশি হতে পারবে না।  

আইন অনুযায়ী, নির্বাচিত প্রার্থীদের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে ব্যয়ের হিসাব সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে দিতে হয়। কোনো প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব নির্ধারিত সময়ে মধ্যে নির্বাচন কমিশনে জমা না দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান রয়েছে।

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যথাসময়ে ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইসি। সে সময় ভোটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ টাকা। যদিও প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয় সেবারও ছিল ২৫ লাখ টাকা।
 
এবার দেশের মোট ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। ভোটার তালিকা অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোটার সংখ্যা ঢাকা-১৯ আসনে। এখানে মোট ভোটার ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩০১ জন। সবচেয়ে কম ভোটার ঝালকাঠী-১ আসনে। এই আসনে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭৮৫ জন।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের সময় প্রার্থীর ভোটারপ্রতি গড় ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ টাকা। আর প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ১৫ লাখ টাকা।

ইতোমধ্যে প্রতীক পেয়ে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে গেছেন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত তারা প্রচার কাজ চালাতে পারবেন। তবে নির্বাচনী ব্যয় বলতে, ভোটারকে খাওয়ানো বা উপহার দেওয়ার বিষয়টিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
ইইউডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।