ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৩২ সংস্থা নিয়ে কনসোর্টিয়াম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ৩২ সংস্থা নিয়ে কনসোর্টিয়াম

ঢাকা: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৩২টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নিয়ে গঠন করা হয়েছে ইলেকশন অবজারভার কনসোর্টিয়াম (ইওসি)।

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কনসোর্টিয়ামের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

সংবাদ সম্মেলনে ইওসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত ৯৬টি বেসরকারি সংস্থার ৩২টি সংস্থা নিয়ে ইওসি গঠন করা হয়েছে। এই কনসোর্টিয়ামের পর্যবেক্ষক সংখ্যা ৯ হাজার ৫৫৭ জন। এই পর্যবেক্ষকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত পর্যবেক্ষকদের ৮টি বিভাগে বিভক্ত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ পর্যবেক্ষক তৈরি করা হবে। থাকবে ইওসির নিজস্ব মনিটরিং সেল। ইওসির নিজস্ব অফিসে মনিটরিং সেলের কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ইওসির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ইওসির চার সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটি রয়েছে। এই কমিটির মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. জিয়া রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। এছাড়া একটি জাতীয় ম্যানেজমেন্ট কমিটির দ্বারা ইওসির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্রের (এসপিবিকে) নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমানকে। পাশাপাশি এই কমিটিতে ৪ জন কো-চেয়ারম্যান, ৮ জন ডিভিশনাল কো-অর্ডিনেটর ও ৬ জন স্টাফ।

ইওসি’র ভিশন সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় সব নির্বাচন নিরপেক্ষতার সহিত সমন্বিতভাবে পর্যাবেক্ষণ করা ইওসির ভিশন।

ইওসি’র মিশন সম্পর্কে বলা হয়, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় সকল নাগরিকের ভোটের অধিকার একটি নাগরিক অধিকার। জনগণ স্বাধীনভাবে ভোটের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব মতামত প্রদান করে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করে থাকে। তা যথাযথভাবে হচ্ছে কি না অবলোকন করা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে মতামত প্রকাশ করাই ইলেকশন অবজারভার কনসোর্টিয়াম (ইওসি) গঠনের মূল উদ্দেশ্য।

এ সময় নির্বাচন কমিশনের প্রতি চারটি সুপারিশও জানায় ইওসি। সেগুলো হলো—
১। পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় সভার ব্যবস্থা করা।

২। পর্যবেক্ষকদের কার্ড ভোট অনুষ্ঠানের কমপক্ষে ৫দিন পূর্বে পর্যবেক্ষকদের হাতে পাওয়ার ব্যবস্থা করা।

৩। সকল পর্যবেক্ষকদের আইডি-কার্ড গ্রহণের ক্ষমতা নিবন্ধনকৃত সংস্থার নিকট হস্তান্তর করা।

৪। পর্যবেক্ষকদের জন্য যাতায়াতের সুবিধার্থে মোটরসাইকেল স্টিকার অনুমোদন করা।

ইওসির মধ্যে থাকা সংস্থাগুলো হলো—একটিভিটি ফর রিফরমেশন অব বেসিক নিডস (আরবান), ডিএসঅ্যাবিলিটি ইনকুইজিশন অ্যাক্টিভিটিজ (দিয়া), আজমপুর শ্রমজীবী উন্নয়ন সংস্থা (আসাস), বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন (বিএএফ), লুৎফর রহমান ভূঁইয়া (এলআরবি), যুব উন্নয়ন সংস্থা, শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র (এসপিবিকে),  কেরানিগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (কেএইচআরডিএস), অ্যাসোসিয়্যাশন ফর ইন্টিগ্রেটেড সোসিও-ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট ফর আন্ডার প্রিভিলিজড পিউপল (এসডাপ), ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট (ভোসড), সমাজ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (এসপিকে), ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (ডিপি), মাল্টিডিসিপ্লিনারি রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সমাহার), সোস্যাল ইক্যুয়ালিটি ফর ইনফেকটিভ অরগানাইজেশান (সীড), সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান (এসডিও), পল্লী একতা উন্নয়ন সংস্থা (রুডো), সোসাইটি ফর হিউম্যান ইমপ্রুভমেন্ট এম্পাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড লাস্টিং ডেভেলপমেন্ট (শিল্ড), এসো জাতি গড়ি (এজাগ), ফোরাম ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এফএফডিএ), প্রকাশ গণ কেন্দ্র (পিজিকে), রুরাল অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (রাউডো), সার্ভিসেস ফর ইকুইটি অ্যান্ড ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট (সীড), রুরাল এডভান্সমেন্ট কমিটি ফর বাংলাদেশ (র‍্যাক বাংলাদেশ), ইকো-কনসার্ন অ্যাসোসিয়েশন (ইসিএ), এসো বাঁচতে শিখি (এবাস), রুরাল ভিশন (আরভি), পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাসা), সবার তরে আমরা ফাউন্ডেশন (এসটিএএফ), বিয়ান মণি সোসাইটি (বিএমএস), অগ্রগতি সেবা সংস্থা (অসেস), অ্যাসোসিয়েশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট (এআরডি), রাজারহাট স্বাবলম্বী সংস্থা।

সংবাদ সম্মেলনে ইওসির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. জিয়া রহমান বলেন, এখানে যারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন, আমি মনে করি আপনারা সবাই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করেন। এর মানে এই নয় কোনো রাজনৈতিক দলকে সাপোর্ট করা। যেদিন দেশের প্রতিটি মানুষ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করবে, সেই দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শ বাস্তবায়ন হবে।

তিনি আরও বলেন, ইওসির কাজ হবে সব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে জাতি পেতে পারে, সেজন্য কাজ করা। যারাই নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক কর্মকাণ্ড করবে, তার প্রতিবাদ করতে হবে। এর মাধ্যমে আপনারা একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন।

সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক একটি গ্রামাটিক্যাল কাজ। বিভিন্ন ধরনের ব্যকরণ, নিয়ম আছে। সেগুলোকে স্মরণ করে ইওসি কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইওসির চেয়ারম্যান ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্রের (এসপিবিকে) নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান, বিয়ান মনি সোসাইটির (বিএমএস) চেয়ারম্যান নাজনীন ইসলাম, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশনের (বিএএফ) নির্বাহী পরিচালক মো. মুনির হোসেন, ইকো-কনসার্ন অ্যাসোসিয়েশনের (ইসিএ) প্রধান নির্বাহী সাইফুর রহমাস, পল্লী একতা উন্নয়ন সংস্থার (রুডো) প্রধান নির্বাহী শামীম রেজা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩
এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।