ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

বর্ষবরণ শেষে ফের আন্দোলনে ববি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
বর্ষবরণ শেষে ফের আন্দোলনে ববি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ববিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বাংলা নববর্ষ বরণ শেষে ফের আন্দোলন শুরু করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা।

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীরা ও ৮ দফা দাবিতে শিক্ষক সমিতি পৃথকভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

ভিসির পদত্যাগ অথবা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভিসিবিরোধী চলমান আন্দোলনের ২১ তম দিন সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। এসময় তারা ভিসির পদত্যাগ অথবা পূর্ণ মেয়াদে ছুটিতে যাওয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। বরিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।  ছবি: বাংলানিউজএদিকে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন শিক্ষকরা। ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ববি শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

চলমান আন্দোলনের বিষয়ে ববি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জানান, ‘বাঙালির প্রাণের উৎসব হলো নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান। এজন্য রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের দিন আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত ছিলো। তবে আমরা বৈশাখ বরণে যেসব কর্মসূচি পালন করেছি তার মাধ্যমেও ভিসি’র পদত্যাগ জানানো হয়। এটিকে আন্দোলনের একটি অংশ বলা যায়।

তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের একদিন পরে ভিসির পদত্যাগ বা পূর্ণ মেয়াদে ছুটির দাবিতে পুনরায় আন্দোলন কর্মসূচি পালন শুরু করেছি। তবে দেশবাশী এখনো বৈশাখী উন্মাদনায় রয়েছে। তাদের কথা ভেবে আমরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে না গিয়ে আপাতত আগের মতো ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক ও তাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে ববি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ববির শিক্ষকরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার শিকার হচ্ছেন। আমরা আমাদের ৮ দফা যৌক্তিক দাবি আদায়ে দু’ঘণ্টা করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছি। দাবি না মানা হলে আরো বড় কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচির আয়োজন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদ করা শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেন ভিসি। এজন্য ২৬ মার্চ থেকেই তার পদত্যাগ দাবিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্র্থীরা।

আন্দোলন দমাতে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর হল ত্যাগের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সিটি মেয়র’র উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠকের পরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

সবশেষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ১৫ দিনের জন্য ছুটিতে যাওয়ার আবেদন করেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে। কিন্তু ছুটির এই আবেদন লোক দেখানো দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান ও জনসংযোগ বিভাগের চলতি দায়িত্বে উপ-পরিচালক ফয়সল আহমেদ রুমিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং ভিসির পদত্যাগ দাবিতে চারবার বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। ভিসির পদত্যাগ বা পূর্ণমেয়াদে ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে না পাওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।