জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নবম শ্রেণির পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৮৬৯ কপি পাঠ্যবই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের একটি প্রস্তাব নিয়ে আসা হলেও তা অনুমোদন দেয়নি সরকার।
সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক থেকে এ বিষয়ে আরও যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন ও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, নতুন বই ১ জানুয়ারিতে আমাদের দেওয়ার কথা। কতগুলো আমরা ইতোমধ্যে অর্ডার দিয়েছি। তবে আমরা আরও ভালোভাবে যাচাই করার জন্য আজকে বলেছি।
তিনি বলেন, এর আগে যারা যারা পেয়েছিল তাদের বইয়ের মান কেমন ছিল, কাগজের কি ছিল এবং কারা একাধিক পাচ্ছে, মনোপলি হচ্ছে কি না, আমরা সে কারণে লিস্ট থেকে আরেকটু যাচাই-বাছাই করব। আজকে বই কেনার যে প্রস্তাব ছিল সেটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনিয়মের সংবাদ আমরা মাঝেমধ্যে পাই, ঠিকমতো করে না। আর একজন একটা অর্ডার নিয়ে বাকিগুলো নিয়েছে, সে ধরনের কিছু কিছু অভিযোগ আছে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলো আইডেন্টিফাই (চিহ্নিত) করতে বলেছি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যের নবম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার জন্য পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৮৬৯ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহ করার একটি প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। এজন্য ব্যয় উল্লেখ করা হয় ৪৭৯ কোটি ৮২ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৭ টাকা। প্রতিটি বইয়ের দাম উল্লেখ করা হয় ৮৬ দশমিক ৪৭ টাকা।
সূত্রটি জানিয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ৯ম শ্রেণি, দাখিল ৯ শ্রেণি এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল শ্রেণি এবং কারিগরি ট্রেড ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য মোট পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ৮৬৯ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের লক্ষ্যে উন্মুক্ত দরপত্র (ইজিপি) আহ্বান করা হলে ২৩৪টি দরপত্রের বিপরীতে ১৪৪টি প্রতিষ্ঠানের ৭১৮টি দরপত্র জমা পড়ে।
এর মধ্যে ৫৯৩টি দরপত্র কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপন্সিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক ২২৩টি দরপত্রের রেসপন্সিভ সর্বনিম্ন দরদাতার উদ্ধৃত দর দাপ্তরিক প্রাক্কলিত দরের চেয়ে বেশি ও বর্তমান বাজার দরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় দরদাতার জামানত ১০ শতাংশ দেওয়ার সুপারিশ করে।
টিইসির সুপারিশ অনুযায়ী উল্লিখিত ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য মোট ৪৭৯ কোটি ৮২ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৭ টাকার প্রয়োজন হবে। বিষয়টি সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটিতের বৈঠকে উপস্থাপন করা হলে কমিটি তা আরও যাচাই-বাছাই করতে বলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
জিসিজি/এএটি