ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্বর্ণ বেচে দিচ্ছে মানুষ, ব্যবসায় মন্দার হাওয়া

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
স্বর্ণ বেচে দিচ্ছে মানুষ, ব্যবসায় মন্দার হাওয়া ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে কমে গেছে স্বর্ণের চাহিদা, বিক্রি কমেছে প্রায় ৮০ ভাগ। যাদের ঘরে স্বর্ণ আছে, তারা এখন বেচে দিচ্ছেন।

এ অবস্থায় এ ব্যবসায় মন্দার হওয়া অনুভব করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি আশঙ্কা করছে, এভাবে স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকলে আগামী পাঁচ মাসের (ডিসেম্বর) মধ্যে ২৫ ভাগ দোকান বন্ধ হয়ে যাবে।

দফায় দফায় দাম বেড়ে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে সোনা। ৫ আগস্ট বিশ্ববাজারে আউন্স প্রতি দাম ওঠে ২ হাজার ৬৫ ডলার, যা বিশ্বের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। বিশ্ববাজারে কিছুটা দরপতন হলেও দাম এখনও ২ হাজারের ডলারের ওপরে আছে।  

বিশ্লেষকদের মতে, চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধে ডলারের দরপতনে আস্থা হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ঝুঁকছেন নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে খ্যাত স্বর্ণ মজুদের দিকে। যার ফলে ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলেছে স্বর্ণের দাম।

শুধু বিশ্ববাজারেই নয়, স্বর্ণের দাম রেকর্ড গড়েছে দেশের বাজারেও। সবশেষ ৬ আগস্ট স্বর্ণের দাম ভরি প্রতি ৪ হাজার ৪শ ৩২ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস)। ফলে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম দাঁড়িয়েছে ৭৭ হাজার ২১৫ টাকা। এক বছর আগেও দাম ছিল ৫২ হাজার ১৯৬ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রতি ভরিতে দাম বেড়েছে ২৫ হাজার টাকার বেশি।  

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাবেক সভাপতি দিলীপ রায় বলেন, ঈদ মৌসুমে আমরা বছরের চার ভাগের এক ভাগ স্বর্ণ বিক্রি করতাম। এখন এমন অবস্থা হয়েছে অনেক দোকান কোনোদিন বউনিও করতে পারতেছে না। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতে আকাশচুম্বী দাম হওয়ার কারণে ক্রেতা নেই বলেলেই চলে।

দেশে স্বর্ণের ব্যবসা মূলত গয়না কেন্দ্রীক। যেখানে বছরের শুরু থেকেই করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চলছে ভাটার টান। তার ওপর দফায় দফায় দাম বৃদ্ধির ফলে বিক্রি নেমে এসেছে তলানীতে।

ব্যবসায়ীদের হিসাবে আগের বছরের (২০১৯ সাল) তুলনায় চলতি বছরের জুলাই শেষে স্বর্ণের বিক্রি কমেছে প্রায় ৮০ ভাগ। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, গয়না কেনার চেয়ে বিক্রির প্রবণতা বেড়েছে ভোক্তার।

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সভাপতি এনামুল হক বলেন, মানুষ প্রয়োজনেই হোক আর অপ্রয়োজনেই হোক ব্যাপক আকারে স্বর্ণ বিক্রি করে দিচ্ছেন। আমাদের শো-রুমগুলোতে আমরা যে পরিমান স্বর্ণ বিক্রি করছি, তার ১০ গুণ স্বর্ণ আমাদের কাছে বিক্রি করার জন্য আসছে। করোনা ভাইরাসের কারণে হোক আর বেশি দামের আশায় হোক মানুষ স্বর্ণ বেচে দিচ্ছে।

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির হিসাবে ছোট-বড় মিলিয়ে দেশে নিবন্ধিত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। স্বর্ণের দামের এমন উর্ধগতি থাকলে এ বছরের মধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে অন্তত ২৫ ভাগ ব্যবসায়ী।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২০
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad