ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ২ লাখ অনিবন্ধিত যানবাহন

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩১ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৯
সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ২ লাখ অনিবন্ধিত যানবাহন সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনিবন্ধিত বাস। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম:  সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে অনিবন্ধিত এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও চট্টগ্রামের সড়কজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ২ লাখ অনিবন্ধিত যানবাহন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) করা অনিবন্ধিত যানবাহনের সর্বশেষ তালিকাতেই এ তথ্য উঠে এসেছে।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় মোট অনিবন্ধিত যানবাহন রয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭০টি। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৯ হাজার ৫৩০টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১১ হাজার ৪০০টি, কুমিল্লায় ৯৬ হাজার ৫৭০টি, নোয়াখালীতে ১৭ হাজার ৩৫০টি, ফেনীতে ১৭ হাজার ৪০০টি, চাঁদপুরে ১১ হাজার ২০০টি, লক্ষীপুরে ৭ হাজার ৪২০টি, খাগড়াছড়িতে ৯ হাজার ৮৭০টি, রাঙামাটিতে ৩ হাজার ৭৯০টি বান্দরবানে ৮৪০টি এবং কক্সবাজারে ১৪ হাজার অনিবন্ধিত যানবাহন রয়েছে।

অনিবন্ধিত যানবাহনের মধ্যে ৯৩ হাজার ৭৫০টি ইজিবাইক, ১২ হাজার ১৫০টি নছিমন-করিমন ও ভটভটি, ৯৫০টি চাঁদের গাড়ি, ৩১ হাজার ৪২০টি মোটর সাইকেল, ৫৬ হাজার ৯০০টি থ্রি-হুইলার, ১ হাজার ১৫৫টি হালকা মোটরযান, ২ হাজার ১৯০টি মধ্যম মোটরযান, ৪৮০টি ভারি মোটরযান এবং অন্যান্য যানবাহন রয়েছে ৩৭৫টি।

সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল।                                             <div class=

ছবি: সোহেল সরওয়ার" src="https://www.banglanews24.com/media/imgAll/2019May/bg/bg220190704192040.jpg" style="margin:1px; width:100%" />

সংশ্লিষ্টরা জানান, অনিবন্ধিত এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের। তাদের নজরদারির মধ্যেও এতো বিপুল সংখ্যক অনিবন্ধিত যানবাহন কীভাবে সড়কে চলছে- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে খোদ হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।

অনিবন্ধিত ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিষয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদনের শুনানিতে গত ২৪ জুন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ প্রশ্ন তুলেন।

শুনানির এক পর্যায়ে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর তাগিদ দিয়ে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার বিআরটিএর প্রতিনিধিকে বলেন, শুধু বসে বসে বেতন নেবেন, দায়িত্ব নেই বলবেন- তা তো হয় না।

বিচারক প্রশ্ন রাখেন, পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে আনফিট-অনিবন্ধিত যানবাহন কীভাবে চলে? এভাবে চলতে পারে না। আমাদের একটা সিস্টেমের মধ্যে আসতে হবে। এভাবে চলে বলেই হয়তো মানুষ মারা যাচ্ছে।

সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনিবন্ধিত সিএনজি চালিত অটোরিকশা।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

জানতে চাইলে বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মনজুরুল হক বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার বিপরীতে বিআরটিএর বিভাগীয় কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন মাত্র ৩জন। এতো কম সংখ্যক লোকবল দিয়ে পুরো বিভাগে অনিবন্ধিত এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। ফলে এসব অনিবন্ধিত যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মূল দায়িত্ব বর্তায় পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপর।

তিনি বলেন, আমাদের সাধ্যের মধ্যে আমরা সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছি। প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অনিবন্ধিত ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সবিহীন চালকদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। অনিবন্ধিত ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন জব্দ করা হচ্ছে। অভিযানের কারণে জনদুর্ভোগ যাতে না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে।

‘হঠাৎ অভিযানে গিয়ে নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, অক্সিজেন, নিউ মার্কেটের সব টেম্পু জব্দ করলাম। অনিবন্ধিত ও ফিটনেসবিহীন এসব টেম্পুর চলাচল হঠাৎ বন্ধ করে দিলে নগরের এতো মানুষ কীভাবে যাতায়ত করবেন? এ জন্য আমরা ধাপে ধাপে এগোচ্ছি। মালিকদের সময় দিচ্ছি। বিকল্প যানবাহন নিয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ’ বলেন এ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, অনিবন্ধিত ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে অনেক সময় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে অভিযানে ব্যাঘাত ঘটে। ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৯
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।