ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আল্টিমেটামের সময় শেষ, কাজের অগ্রগতি শূন্য!

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৯ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৯
আল্টিমেটামের সময় শেষ, কাজের অগ্রগতি শূন্য! ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম: আল্টিমেটামের সময় শেষ হলেও নগরের ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ পাহাড়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি কেজিডিসিএল, পিডিবি এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা।

ফলে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বাস করা ৮৩৫ পরিবারকে বর্ষার আগেই সরিয়ে নিতে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গত ১৬ এপ্রিল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৯তম সভায় ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ পাহাড়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে কেজিডিসিএল, পিডিবি এবং চট্টগ্রাম ওয়াসাকে নির্দেশ দেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান।

আরও খবর>>
** 
১৫ দিনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ৩০ দিনে উচ্ছেদ পাহাড়ে
** কেজিডিসিএল-পিডিবি-ওয়াসার বিরুদ্ধে মামলার হুমকি ডিসির

এ সময় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধ সংযোগ বিছিন্ন না করলে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের হুঁশিয়ারি দেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।

তবে প্রশাসনের এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তার নির্দেশ ও হুঁশিয়ারিতেও কাজ হয়নি।

আল্টেমেটামের সময় শেষ হলেও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ‘ইউটিলিটি সার্ভিস’ বিচ্ছিন্ন করেনি সেবা সংস্থাগুলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন নাহার বাংলানিউজকে জানান, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে এখনো আমরা অভিযান শুরু করিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব পাহাড়ে পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।  

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (দক্ষিণ) প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বাংলানিউজকে জানান, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করতে এখনো অভিযান চালায়নি পিডিবি। আগামী সপ্তাহে অভিযান চালানো হবে।   

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) তাজউদ্দিন ডালি বাংলানিউজকে জানান, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গত শনি ও রোববার মতিঝর্ণা পাহাড় এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় ‘অবৈধ সংযোগ খুঁজে না পাওয়ায়’ কোনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যায়নি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, মতিঝর্ণা ছাড়া অন্য ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোতে এখনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। এসব পাহাড়ে যদি অবৈধ সংযোগ থাকে ভিজিল্যান্স টিমের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে সেগুলো বিচ্ছিন্ন করা হবে।

কেজিডিসিএলের এ কর্মকর্তা ‘অবৈধ সংযোগ খুঁজে না পাওয়ার’ তথ্য দিলেও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির একাধিক সদস্য বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, মতিঝর্ণাসহ নগরের সব ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে যে সব গ্যাস সংযোগ আছে তার সবটাই অবৈধ।

কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন- বৈধ ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য জমির মালিকানা কাগজ দরকার হলেও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করা কোনো পরিবারের জমির মালিকানা কাগজ নেই। দখলদাররা ঘর তৈরি করার পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ইউটিলিটি সার্ভিস নিয়ে সেখানে লোকজনকে বাড়তি টাকায় ঘর ভাড়া দেয়।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৯তম সভায় ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ইউটিলিটি সার্ভিস বিচ্ছিন্ন এবং ১৫ মে’র মধ্যে পাহাড় খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত রেজুলেশন আকারে সব সংস্থাকে পাঠিয়েছি আমরা।

তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময় শেষ হলেও কেন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি- তা সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলো ভালো বলতে পারবে। তাদের অবহেলার কারণে পাহাড়ে যদি কোনো দুর্ঘটনা বা প্রাণহানি ঘটে, দায় তাদেরকেই নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৯
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।