মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৯তম সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ইউটিলিটি সার্ভিস প্রোভাইডার (কেজিডিসিএল-পিডিবি-ওয়াসা) যারা আছে, তাদের কিন্তু এখন থেকেই কাজ শুরু করতে আমরা চিঠি দিয়েছি।
তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি পাহাড়ের মধ্যে ১০টি পাহাড় ব্যক্তি মালিকানাধীন।
মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, চসিক, গণপূর্ত বিভাগ, রেলওয়েসহ সরকারি মালিকানাধীন যে পাহাড়গুলো আছে তা রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্টদের আরও তদারকি প্রয়োজন। এসব পাহাড়ে যারা অবৈধভাবে ঘর তৈরি করে ভাড়া দেয়, তাদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়- সবার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। পাহাড়ে অবৈধভাবে বাস করা কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তারাই দায়ী থাকবে। মানুষের জীবন নিয়ে কাউকে আমরা খেলা করতে দেবো না।
জেলা প্রশাসক বলেন, পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো কোনো ব্যাপার না। কিন্তু বর্ষার সময় উচ্ছেদ করলাম, বর্ষার পরে আবার তারা ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করলো- এভাবে করতে থাকলে স্থায়ী সমাধান আসবে না। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো বছরের পুরোটা সময় অবৈধ স্থাপনামুক্ত রাখতে হবে। যাতে সেখানে কেউ বসবাস করতে না পারে। এ জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা আমরা দেবো।
উচ্ছেদের পর সংশ্লিষ্টদের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, এতোগুলো পরিবারকে শহরের মধ্যে ঘর বানিয়ে পুনর্বাসন সম্ভব নয়। এভাবে করতে থাকলে অন্যরাও লোভে পড়ে এখানে চলে আসবে। গৃহহীনদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। দেশের একটি মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে সে জন্য একটি বাড়ি, একটি খামার, গুচ্ছ গ্রামসহ নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখানে যারা উচ্ছেদ হবেন তারা এসব প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন।
ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করছে ৮৩৫ পরিবার
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দেলোয়ার হোসেন জানান, নগরের সরকারি-বেসরকারি ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি পাহাড়ে ৮৩৫ পরিবার বসবাস করছে। এর মধ্যে ৭টি সরকারি পাহাড়ে ৩০৪ পরিবার এবং ১০টি বেসরকারি পাহাড়ে ৫৩১ পরিবার বসবাস করছে।
তিনি জানান, পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা তৈরিতে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ইন্ধন রয়েছে। এসব পাহাড়ে অবৈধভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সংযোগ নিয়ে ঘর তৈরি করে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি পাহাড়ে সরকারি টাকায় প্রকল্প নিয়ে সড়ক, ড্রেন নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। এসব কারণেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেও অবৈধভাবে বসবাসরত লোকজনকে পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বিভাগীয় কমিশনার ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় ৩০ এপ্রিল এর মধ্যে ১০টি ব্যক্তি ও ৭টি সরকারি মালিকানাধীন পাহাড়ে বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং পানিসহ সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং ১৫ মে এর মধ্যে সব ধরণের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করা ৮৩৫ পরিবারবারকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশ সময়ঃ ১৭৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
এমআর/টিসি