২৭ মার্চ চারটি গাড়ি নিয়ে একদল পাকিস্তানি সৈন্য দেওয়ানহাট থেকে হালিশহর কাঁচা রাস্তার মুখে এলে ইপিআর বাহিনী তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এসময় বেশ ক’জন পাকিস্তানি সৈন্য মারা যায়, পিছু হটে বাকি সৈন্যরা।
মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী সম্পাদিত ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম’ গ্রন্থে বিবৃত হয়েছে এ তথ্য।
মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামে ২৭ মার্চের বর্ণনায় আরও বলা হয়, এদিন হাবিলদার আবদুল মান্নান এক প্লাটুন ইপিআর সৈন্য নিয়ে শহর থেকে হালিশহর পৌঁছালে সুবেদার জয়নালের নির্দেশে তারা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে রাস্তার মোড়ে অবস্থান নেন।
২৭ মার্চের এই দিনে বন্দরটিলা নেভাল বেইজ থেকে কুমিরার দিকে যাওয়ার পথে ৩০ জনের পাকিস্তানি কমান্ডো বাহিনীকে বহনকারী দুটি জিপ ও তিনটি পিকআপ ডবলমুরিং থানা এবং আগ্রাবাদ রোডে ক্যাপ্টেন রফিকের ইপিআর বাহিনীর অ্যামবুশে পড়ে নাস্তানাবুদ হয়েছিল। কুমিরা এলাকায় বাধাপ্রাপ্ত ৫৩ ব্রিগেডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য দুই কমান্ডো ব্যাটালিয়নের একটি প্লাটুনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এই ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সোলায়মানের নেতৃত্বে বিকেলে ৩০ কমান্ডো ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে যাত্রা করেছিল। ক্যাপ্টেন রফিকের নেতৃত্বে আগে থেকে অপেক্ষায় থাকা ইপিআর সৈন্যরা আগ্রাবাদ রোড ও ডবলমুরিং থানার নিকটবর্তী এলাকায় তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। এসময় লে. কর্নেল সোলায়মান ও আরও একজন অফিসার, দুজন জেসিও, ১০জন কমান্ডো নিহত এবং ১০জন আহত হয়। কমান্ডোরা আহত ও নিহতদের নিয়ে নেভাল বেইজে ফিরে আসতে সক্ষম হয়।
চট্টগ্রাম সেনানিবাস একাত্তরের বর্বরতার প্রথম সাক্ষী। এখানে প্রায় ২৫শ’ নিরস্ত্র বাঙালি সৈনিককে হত্যা করা হয় একাত্তরের প্রথম প্রহরে। পাশাপাশি আশপাশের এলাকাগুলো থেকে বিপুলসংখ্যক সাধারণ লোকজনকে এখানে এনে হত্যা করা হয়।
সেনানিবাসের বাইরে প্রথম গণহত্যা ঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে। বন্দরের ১৭ নম্বর জেটিতে ২৭ মার্চ প্রায় ১১২ জন নিরস্ত্র বাঙালি সৈনিক পাকিস্তান বাহিনীর হাতে প্রাণ হারায় বলে উল্লেখ করেন মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া। পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের সোয়াত জাহাজে নিয়ে আসা হয়েছিল এবং নিরস্ত্র করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, ২৭ মার্চ, ২০১৯
এসি/টিসি