ঢাকা, রবিবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩২, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০ মহররম ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শীতের ভোরে নগর ঘুরে

বন্দরে একজনের গেইটপাসে ঢুকছে আরেকজন

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪:০২, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
বন্দরে একজনের গেইটপাসে ঢুকছে আরেকজন বন্দরে একজনের গেইট পাসে ঢুকছে আরেকজন। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টা। চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর গেইট। জেটিতে একটি গমের জাহাজে কাজ করতে গেইটপাস প্রদর্শন করলেন শ্রমিক মোস্তফা। কিন্তু গেইটে দায়িত্বরত বন্দরের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য তার নাম জানতে চাইলেন।

গেইটপাসে দেওয়া নামের সঙ্গে মিল না থাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নাম ঠিক করে বলতে বললেন। তবে গেইটপাসে লেখা নাম বলতে পারেননি অক্ষরজ্ঞানহীন শ্রমিক মোস্তফা।

তার সরল ভাষ্য, ‘এই পাস দিয়েই তো গত পাঁচদিন বন্দরে প্রবেশ করেছি। ’

এতে ক্ষিপ্ত হলেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

গেইটপাসটা রেখে দিয়ে মোস্তফাকে ধমক দিয়ে চলে যেতে বললেন। সহজ-সরল অসহায় শ্রমিক গেইট বক্সের পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে রইলেন।

মোস্তফাকে কেন প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না বুঝতে পারিনি। তবে বিষয়টা পরিষ্কার হলো মোস্তফার সঙ্গে কথা বলার পর। মোস্তফা জানান স্বপন মাঝির অধীনে চাকরি করেন। মাঝি যে গেইটপাস দেন সেখানে তার ছবি লাগিয়ে বন্দরে প্রবেশ করেন। গেইটপাসে কার নাম লেখা মূখ্য হয়ে উঠেনি কখনো। বন্দরে প্রবেশ করতে সমস্যা হয়নি। বন্দরে একজনের গেইট পাসে ঢুকছে আরেকজন

তবে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) গেইটের নিরাপত্তারক্ষী চোখ উল্টালেন কেন? প্রশ্নের উত্তর শ্রমিক মোস্তফা বুঝতে না পারলেও বাংলানিউজের কাছে পরিষ্কার। মোস্তফা গেইটে প্রবেশ করার আগেই বাংলানিউজের প্রতিবেদক সেখানে উপস্থিত হন। বন্দরে পণ্য ডেলিভারির বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নিরাপত্তারক্ষী।

পরে দায়িত্বরত গেইট সার্জনের কাছে রাতের তথ্য জানতে চাইলে তিনিও অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোস্তফার সঙ্গে কথা হয়।

বরিশাল জেলার রাজপুর থানার মীর মকবুলের ছেলে মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, ৭ নম্বর বার্থে থাকা একটি গম বোঝাই জাহাজে কাজ করছেন গত ছয়দিন ধরে। একই পাস দিয়ে গত ৫ দিন বন্দরে প্রবেশ করেছেন। বন্দরে একজনের গেইট পাসে ঢুকছে আরেকজন

তিনি বলেন, মাঝি শ্রমিকদের জন্য ১০ দিনের পাস নিয়ে থাকেন। ওই পাস দিয়ে যে কোন শ্রমিক বন্দরে প্রবেশ করতে পারে। তাই পাসে কার নাম লেখা থাকে তা আমরা জানি না।

বন্দরে প্রবেশ করতে না পারলে সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১২ ঘণ্টা চাকরি করে ৬০ টাকা পাই। আজ কাজ করতে না পারলে টাকা পাব না। মোস্তফা জানান, গম বোঝাই জাহাজে মোট চারজন শ্রমিক কাজ করবে। ফলে তিনি প্রবেশ করতে না পারলে বাকি তিনজন শ্রমিকও কাজ করতে পারবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।