আইসিসি নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৫-এ শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারলেও প্রতিপক্ষদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল বাংলাদেশ। অলরাউন্ডার ফাহিমা খাতুন জোর দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ যেকোনো দলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলার সামর্থ্য রাখে।
ম্যাচ শেষে ৪ উইকেটে হারের পর দলের সেরা বোলার ফাহিমা খাতুন বলেন, ‘আমরা হিদার নাইটের উইকেটটি নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছিলাম, কারণ ওই পর্যায়ে তাকে আউট করতে পারলে ম্যাচের পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারতো’। ইংলিশ এই অভিজ্ঞ ব্যাটার ১১১ বলে ৭৯ রানের একটি অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ইনিংসের শুরুতে চাপ সামলে বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যাটিং করে তিনি দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
এই হার সত্ত্বেও বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসে কোনো চিড় ধরেনি। টুর্নামেন্টে একটি জয় ও একটি হার নিয়ে বাংলাদেশ পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে এবং সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে আছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা বাংলাদেশ দল বিশ্বাস করে, তারা যেকোনো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই লড়াই করতে পারে।
ফাহিমা আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপ ভালোভাবে শুরু করেছি এবং একটি দারুণ জয় দিয়ে যাত্রাটা শুরু হয়েছিল। তাই আমরা খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আজকের ম্যাচে আমরা ২০-৩০ রান কম করেছি। কিন্তু আমরা যদি এই ছন্দ ধরে রাখতে পারি, তাহলে কোনো দলই আমাদের সহজে নিতে পারবে না। আমরা শুধু ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য নয়, বিশ্বকাপ জিততে এসেছি, প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন। আমরা কাউকে বড় করে দেখব না, নিজেদের শক্তি অনুযায়ী খেলব এবং নির্দিষ্ট দিনে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। ফল আমাদের পক্ষেই আসবে’।
ম্যাচে ফাহিমা খাতুন ১০ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন। তার বোলিং নৈপুণ্যে দল বিশ্বাস করেছিল যে ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জেতা সম্ভব। একটা পর্যায়ে ইংল্যান্ডকে ২৩ ওভারে মাত্র ৭৮ রানে ৫ উইকেটে আটকে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু অ্যালিস ক্যাপসি (২০) এবং চার্লি ডিন (২৭*) এর কার্যকরী ইনিংসে ৪ ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় ইংল্যান্ড।
ফাহিমা বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম যে আমাদের জেতার মতো স্কোর আছে এবং আমরা তা রক্ষা করব, কারণ আমাদের বোলিং আক্রমণের ওপর পূর্ণ আস্থা ছিল। টিম ম্যানেজমেন্টও আমাদের ওপর ভরসা রেখেছিল, যা আমাদের অনেক অনুপ্রাণিত করেছে। চার্লি ডিন যখন উইকেটে এলেন, তাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে, সে সত্যিই ভালো খেলেছে। ১৬ রান বাকি থাকতেও আমি সতীর্থদের বলছিলাম যে আমরা যদি চারটি অলৌকিক বল করতে পারি, তাহলে ম্যাচটি আমাদেরই হবে। কারণ ক্রিকেটে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হতে পারে’।
তবে ম্যাচে একটি বড় দুঃসংবাদ ছিল ওপেনিং বোলার মারুফা আক্তারের চোট। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচসেরা হওয়া এই বোলার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র পাঁচ ওভার বল করতে পারেন। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে তিনি মাঠের বাইরে ছিলেন। তবে তার সতীর্থ ফাহিমা জানিয়েছেন, ‘তার কিছুটা ক্র্যাম্পিংয়ের সমস্যা হচ্ছিল। আমার মনে হয় ও এখন ভালো আছে। তার অভাব আমরা অনেক অনুভব করেছি। সে যদি আরও দুই-তিন ওভার বল করতে পারত, তাহলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারতো’।
আগামী শুক্রবার নিজেদের পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ, যারা টুর্নামেন্টে এখনো কোনো জয় পায়নি।
এমএইচএম