ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

নীলফামারীতে আমনের চারা সংকট

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২০
নীলফামারীতে আমনের চারা সংকট এবার বন্যার কারণে আমন ধানের চারা সংকট দেখা দিয়েছে, ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী:  বন্যার পর গোটা নীলফামারী জেলায় আমনের চারার সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে চড়া দামে আমনের চারা ও দোগাছি সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ করতে হচ্ছে কৃষকদের।

 

নীলফামারীতে চার দফা বন্যায় তিস্তাপাড়ের কৃষকদের আমনের চারা পানিতে তলিয়ে পচে গেছে। এছাড়া জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার কারণে বীজতলা ও আবাদি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  

কৃষি বিভাগের মতে, নীলফামারীতে অতিবৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমন ধানের চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, খরিপ-২ (২০২০-২১) মৌসুমে এবারের বন্যায় ডিমলার ছয়টি ও জলঢাকার তিনটি ইউনিয়নের মোট ২৭ দশমিক ৮ হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৮৬৭ জন কৃষকের ৫৫ দশমিক ২৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বীজতলা নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা আমন চাষ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

বর্তমানে জেলার কৃষকরা আমনের চারার বদলে দোগাছি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আমনের চারার উচ্চতা যখন প্রায় এক ফুট হয়, তখন সেই চারাকে অন্য জমিতে লাগানো হয়। এরপর আবার সেই চারা তুলে আমনের জমিতে রোপণ করা হয়। দু’বার রোপণ করা হয় বলে এ চারাকে বলা হয় দোগাছি। সাধারণত বন্যাকবলিত এলাকায় এমন চারা ব্যবহার লাভজনক হয়।

দোগাছির উপকারিতা কি জানতে চাইলে কৃষক আমিনুর রহমান ও মামুদ বলেন, দোগাছি করলে চারার কাণ্ড মোটা হয়, আট/১০টি চারা থেকে কমপক্ষে ৪০/৫০টি গাছ গজায় এবং দোগাছির চারা জমিতে রোপণ করলে চারা সাশ্রয় ও চারার গোছা মোটা হয়, ধানের শীষ লম্বা হয়, পোকার আক্রমণসহ ধান গাছে নানাবিধ রোগ বালাই দেখা না দিলে দোগাছি ধানের ফলনও ভালো পাওয়া যায়।  

নীলফামারীর সৈয়দপুরের বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কাদের জানান, ৩০ শতাংশ জমির জন্য দোগাছি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এতো দামে চারা কিনে আমন লাগানো মোটেই সম্ভব নয়।  

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, এবারে জেলায় উফশী (উচ্চ ফলনশীল), হাইব্রিড ও স্থানীয় জাত মিলে ১ লাখ ১৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩১ হাজার মেট্রিক টন। এজন্য বীজতলা তৈরি করা হয়েছিল ৬ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে কিছু বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে এমন কিছু জায়গায় ১৬টি বীজতলা তৈরি করা হয়েছে এবং কৃষকদের ভাসমান বীজতলা তৈরির প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। পরে এসব ভাসমান বীজতলা খালি হলে সবজি বীজ ছিটিয়ে দেওয়া হবে। এতে মিটবে সবজির চাহিদা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২০
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।