ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

১০ বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০
১০ বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ

ঢাকা: গত ১০ বছরে দেশে তরল দুধের উৎপাদন চার গুণেরও বেশি বেড়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে দুধের বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ৯৯ লাখ মেট্রিক টন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে। 

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে বাংলাদেশ ডেইরি ডেভলপমেন্ট ফোরাম (বিডিডিএফ) ও অক্সফ্যাম আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।  

অক্সফ্যামের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার,  বিডিডিএফের সভাপতি অ্যডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, অতিরিক্ত সচিব ও এলডিডিপি প্রকল্প পরিচালক কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবদুল জব্বার শিকদার,  প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার প্রমুখ।

সভায় মূল নিবন্ধ পাঠ করেন- বিডিডিএফের প্রচার সম্পাদক ও অক্সফ্যামের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. মুতাসীম বিল্লাহ। তিনি বলেন,  দেশে তরল দুধের উৎপাদন বিগত ১০ বছরে বেড়েছে চার গুণেরও বেশি। বাংলাদেশে বর্তমানে বাণিজ্যিক খামারের সংখ্যা প্রায় এক লাখ। দুধের বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ৯৯ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমান ধারায় দুধের উৎপাদন অব্যাহত থাকলে দেশ ২০২৫ সালের মধ্যে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে, যা বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সাহায্য করবে।  

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন- অক্সফ্যামের ইকোনোমিক জাস্টিস ও রেসিলিয়েন্স প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. খালিদ হোসাইন।  

অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রান্তিক নারী খামারীরা নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।  

কুড়িগ্রামের রৌমারীর খামারী আমেনা বেগম জানান, প্রান্তিক জনপদে পর্যাপ্ত চিলিং প্ল্যান্ট না থাকায় প্রায়ই উৎপাদিত দুধ নষ্ট হচ্ছে। তিনি সরকারের কাছে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের জন্য চিলিং প্ল্যান্ট স্থাপনসহ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে দেশের দুগ্ধশিল্প বিকাশে সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ঋণ সুবিধাসহ সম্প্রসারণ সেবা ও ন্যায্যমূল্যে বাজারে দুধ বিক্রি নিশ্চিতের দাবি জানান প্রান্তিক দুগ্ধ খামারিরা। দেশে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকা সত্ত্বেও যথাযথ নীতিমালা ও সংশ্লিষ্ট পরিষেবার অভাবে এ শিল্পের বৃদ্ধি ক্রমাগত ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ খামারীদের।

ডেইরি শিল্পের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তারা আরও বলেন, আমদানিকৃত গুড়া দুধের সঙ্গে দেশে উৎপাদিত দুধের অসম প্রতিযোগীতা বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে বাল্ক আকারে আমদানি করা গুড়া দুধের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করার ব্যাপারেও জোর দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের অন্যতম একটি সম্ভাবনাময় খাত হচ্ছে দেশীয় ডেইরি শিল্প। বর্তমানে ডেইরী খাত বাণিজ্যিকভাবে সফল একটি শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে। দেশে বর্তমানে এক লাখেরও বেশি নিবন্ধিত খামারি রয়েছেন, যার প্রায় অর্ধেকই উচ্চশিক্ষিত। বিগত বছরগুলোতে দুধ উৎপাদনের হারই শুধু বাড়েনি, এর সঙ্গে গবাদি পশুর মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭ গুণ। দেশে দুধের মোট চাহিদার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এখন দেশীয় উদ্যোক্তারা সরবরাহ করছেন। কেবল অসম শুল্ক নীতির কারণে এমন একটি সম্ভাবনাময় শিল্পখাত ক্ষতিগ্রস্থ হলে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে কয়েক লাখ মানুষের জীবনে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০
টিআর/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad