ঢাকা, সোমবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সবজি খেতই জীবন গাবরু মিয়ার

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৬
সবজি খেতই জীবন গাবরু মিয়ার ছবি : আবু বকর সিদ্দিকী-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: মাঠ ভরা সবুজ খেতে মাচায় ঝুলছে সবুজ বরবটি। তা দেখে মন ভরে যায় পথিকের।

মনের গহিনে দেয় হাতছানি। তাইতো বয়সের বাধাকে উপেক্ষা করেই খেতে ছুটে যান আশি উর্ধ্ব কৃষক গাবরু মিয়া।

দিনভর মাচা থেকে সবজি (বরবটি) সংগ্রহ করে আটি বাঁধেন। বিকেল হলেই বিক্রি করতে সে সবজি বাজারে নিয়ে যান। এভাবেই দিন কাটে সিলেট সদর উপজেলার মুফতির বাজার মীরপুরের বাসিন্দা আশি উর্ধ্ব গাবরু মিয়ার। সংসারে তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলে, নাতি-নাতনিদের নিয়ে এক সংসারে আছেন গাবরু মিয়া।

সবজি তুলতে তাকে সাহায্য করেন ছেলেরা। এরপর নিজেই কাঁধে বহন করে নিয়ে যান হাটে। শেষ বয়সে এসেও কৃষি খেত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেননি তিনি।
ছেলেরাও ঘরে আটক রাখতে পারেন না খেত পাগল গাবরু মিয়াকে। এবার তিনি নিজেই সোয়া এক কেদার জমিতে বুনেছেন আমিষ সমৃদ্ধ সবজি বরবটি।

গাবরু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, বাবার কাছ থেকে পাওয়া খেত করার উৎসাহ আজো ধরে রেখেছেন তিনি। বাবার শেখানো অভ্যাস আমৃত্যু লালন করতে চান। আর খেত করেই সংসার চালিয়েছেন, বড় করেছেন ছেলে-মেয়েদের। প্রত্যেক মৌসুমে জমি বর্গা নিয়ে খেত করেন। এবার খেতে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। সর্বসাকুল্যে ২০/২৫ হাজার টাকা লাভ হবে।

বরবটি বাজারে নিয়ে যাওয়ার পর প্রতি আটি ২০ টাকা দরে বিক্রি করেন বলে জানান তিনি। এবার খেতের গাছে ফলন ধরতে দেরি হয়েছে। দেড় মাসের জায়গায় তিন মাস সময় লেগেছে, নতুবা দাম আরও বেশি পেতেন বলে জানান তিনি।    গাবরু মিয়া বলেন, ফসল ফলিয়ে যখন টাকা হাতে আসে, তখন সব কষ্ট মাটি হয়ে যায়।   আর খেতে কাজ করলে শরীরও ভাল থাকে।

তার মতো ওই এলাকার অর্ধশত কৃষক বরবটি আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। অনেকে জমি বন্ধক রেখে, কেউবা বর্গা (বর্গা) নিয়ে চাষ করে ফসল ফলাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তারা একান্ত প্রয়োজন না পড়লে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতাও নেন না বলে জানান তিনি। একই গ্রামের পয়তাল্লিশোর্ধ্ব আশরাফ আলী ও বদরুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা জন্মের পর থেকে দেখে আসছি গাবরু মিয়া কৃষি খেত করে আসছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৬
এনইউ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।