ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বীরপ্রতীক কাকন বিবি আর নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৮ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
বীরপ্রতীক কাকন বিবি আর নেই হাসপাতালের বিছানায় অসুস্থ বীরপ্রতীক কাকন বিবি

সিলেট: একাত্তরের অগ্নিকন্যা বীরপ্রতীক কাকন বিবি আর নেই। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. দেবব্রত রায় বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো প্রায় ১০৩ বছর। হাসপাতালে তিনি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল ইসলামের অধীনে ভর্তি হন এবং আইসিইউতে ডা. সব্যসাচী রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

 

আরও পড়ুন> বীরপ্রতীক কাকন বিবি অসুস্থ, শুধু দুধ খেয়ে বেঁচে আছেন 

তিনি বলেন, কাকন বিবির মরদেহ রাতে হাসপাতালেই রাখা হবে। বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।  

গত সোমবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট, ফুসফুস সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি কেবিনে ভর্তি হন কাকন বিবি। এরপর তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় বলেন ডা. দেবব্রত।  

বুধবার তার চিকিৎসার্থে মেডিকেল বোর্ড বসে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। আইসিইউযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স পেতে বিলম্ব হওয়ায় তাকে পাঠানো হয়নি। এরই মধ্যে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।  

এর আগে ২০১৭ সালের ২১ জুলাই মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যান।  

শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত সোমবার (১৯ মার্চ) তিনি এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এর আগে গত বছর জুলাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েকদিন হাসপাতালে ছিলেন তিনি।

 

প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার নেওয়ার ফ্রেমবন্দি ছবিকাকন বিবির গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারবাজার থানার জিরারগাঁও গ্রামে। তার স্বামী সাঈদ আলীও প্রয়াত।

 ১৯৭১ সালে তিনদিন বয়সী মেয়ে সখিনাকে রেখে যুদ্ধে চলে যান কাকন বিবি। জুনে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। বাঙ্কারে আটকে দিনের পর দিন তাকে নির্যাতন করে পাকিস্তানি সেনারা।

ছাড়া পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর কাছে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নেন কাকন বিবি। রহমত আলীর দলে সদস্য হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধ করেন তিনি। একইসঙ্গে চালিয়ে যান গুপ্তচরের কাজ।

১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে টেংরাটিলার সম্মুখ যুদ্ধে কয়েকটি গুলি তার শরীরে বিদ্ধ হয়। উরুতে কয়েকটি গুলির দাগ এখনও আছে।

টেংরাটিলা যুদ্ধের পর আমবাড়ি, বাংলাবাজার, টেবলাই, বালিউরা, মহব্বতপুর, বেতুরা, দূরবীণটিলা, আধারটিলাসহ প্রায় নয়টি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন কাকন বিবি।

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে তাকে বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
এনইউ/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।