ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

রাখাইনের ১৭৬ রোহিঙ্গা-গ্রাম এখন জনশূন্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
রাখাইনের ১৭৬ রোহিঙ্গা-গ্রাম এখন জনশূন্য রাখাইনে রোহিঙ্গা শূন্য হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম, পালিয়ে আসছেন মানুষ। ছবি: দীপু মালাকার

ধীরে ধীরে রোহিঙ্গা শূন্য হয়ে পড়ছে মিয়ানমারের বিভিন্ন গ্রাম। রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাস দমনের নামে অভিযানে হাজারো রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু হত্যা, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও বাংলাদেশে পালিয়ে আসার জেরে এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সেখানে।

খোদ দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

রাজ্যের ৪৭১ রোহিঙ্গা-গ্রামে ‌‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে’ এরইমধ্যে ১৭৬ গ্রাম এখন পুরোপুরি রোহিঙ্গা শূন্য বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল জ তাই।

তিনি এও জানিয়েছেন, অন্তত ৩৬টি গ্রামের মানুষজন পালিয়ে আংশিক শূন্য হয়েছে। বাকিগুলো অভিযানের ফলে পুরোই খালি।

এদিকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে। এটি মানবতার খাতিরে।  তবে তাদের নাগরিকদের ফিরে যেতে হবে বলে বাংলাদেশ সরকার থেকে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, অবিলম্বে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। আর যারা ফিরতে চান তাদের যাচাই-বাছাই করা হবে, এরপরই তারা অনুমতি পাবেন।

বিশ্বনেতাদের আহ্বানের পরও কেন এমন জাতিগত নিধনযজ্ঞ চলছে, এ বিষয়ে তিনি রোহিঙ্গা ইস্যু এড়িয়ে জবাবে বলেছেন, প্রথমত রাখাইন একটি সন্ত্রাসবাদের রাজ্য, সেগুলো দমন করতেই অভিযান।

ইতোমধ্যে জানা গেছে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিচ্ছেন না দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি।  রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কারণে বৈশ্বিকভাবে নানা সমালোচনার মুখোমুখি পড়ে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি এই সভা বর্জন করলেন।  তার পরিবর্তে থাকবেন দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভান থিও।

নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সংখ্যা প্রায় চার লাখ। এছাড়া সহিংসতায় দেশটিতে প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের।

সবরকম সংঘাত বন্ধে রোহিঙ্গাদের সংগঠন ‘দ্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)’ এক মাসের জন্য অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয়। কিন্তু সেদেশের সরকার সেটি মানেনি।

                সু চিকে ফোন করে নিধনযজ্ঞ বন্ধ করতে বললেন ট্রুডো

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭/আপডেট ১১২৬ ঘণ্টা
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।