ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

সু চিকে ফোন করে নিধনযজ্ঞ বন্ধ করতে বললেন ট্রুডো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
সু চিকে ফোন করে নিধনযজ্ঞ বন্ধ করতে বললেন ট্রুডো জাস্টিন ট্রুডো ও অং সান সু চি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বন্ধ করতে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে আহ্বান জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

সু চিকে ফোন করে ট্রুডো এই মানবিক আহ্বান জানান। ২০০৭ সাল থেকে সু চি কানাডার সম্মানীয় নাগরিক।

এছাড়া শান্তিতে নোবেলজয়ী, তার দেশে শান্তি অচিরেই ফিরে আসুক এমন প্রত্যাশা করেন কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এখনই সু চি যেন ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো উদ্যোগ নেন। এ ব্যাপারে তাদের গভীর উদ্বেগ রয়েছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী অফিস থেকে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। যাতে দু’নেতা-নেত্রীর কথোপকথনের সারসংক্ষেপ উঠে এসেছে।

জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আলোচনা করে সংঘাতমূলক পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এ জন্য সু চি ব্যবস্থা নিতে পারেন। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের মানুষদের ওপর যেকোনো ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। নির্বিঘ্ন বসবাসের ব্যবস্থা করতে হবে, আর নিশ্চিত করতে হবে জাতিংসঘের প্রবেশাধিকার।

                  রাখাইনের ১৭৬ রোহিঙ্গা-গ্রাম এখন জনশূন্য

জাতিসংঘ এই নির্যাতনের বিষয়কে ‘জাতিগত নিধন’ বলে ইতোমধ্যে আখ্যা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে। এছাড়া সহিংসতায় দেশটিতে প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের।

এদিকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে। এটি মানবতার খাতিরে। তবে তাদের নাগরিকদের ফিরে যেতে হবে বলে বাংলাদেশ সরকার থেকে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মিয়ানমার বলছে, অবিলম্বে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। আর যারা ফিরতে চান তাদের যাচাই-বাছাই করা হবে, এরপরই তারা অনুমতি পাবেন।

ইতোমধ্যে জানা গেছে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিচ্ছেন না সু চি। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কারণে বৈশ্বিকভাবে নানা সমালোচনার মুখোমুখি হয়ে শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি এই সভা বর্জন করলেন। তার পরিবর্তে থাকবেন দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভান থিও।

সবরকম সংঘাত বন্ধে রোহিঙ্গাদের সংগঠন ‘দ্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)’ এক মাসের জন্য অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয়। কিন্তু সেদেশের সরকার সেটি মানেনি।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।