ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

১২ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব অর্থনীতি সমিতির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
১২ লাখ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব অর্থনীতি সমিতির সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির কর্মকর্তারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ১২ লাখ ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। যা অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে আড়াইগুণ বেশি।   
 

দেশের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তির বিচারে প্রস্তাবিত বাজেটে বৈদেশিক ঋণের প্রয়োজন গ্রহণ না করে পরিশোধ এবং রাজস্ব আদায় বাড়াতে ২২টি নতুন উৎসের সন্ধান দিয়েছে অর্থনীতি সমিতি।
 
শনিবার (২৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত ও সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন এ প্রস্তাব দেন।

 
 
এতে জানানো হয়, অর্থপাচার রোধ থেকে আহরণ, কালোটাকা থেকে আহরণ, বিদেশি নাগরিকের ওপর কর, বন্ড মার্কেট, সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্ব, সেবা প্রাপ্তির কর, সম্পদ কর, বিমান ভ্রমণ কর, তার ও টেলিফোন বোর্ড, টেলিকম রেগুলেটরি কমিশন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন, ইন্সুরেন্স রেগুলেটরি কমিশন, বিআইডব্লিউটিএ, বেসরকারি হাসপাতাল নবায়ন ফি, সরকারি স্টেশনারি বিক্রয়, পৌর হোল্ডিং কর ইত্যাদি বাজেটে রাজস্ব আয় বাড়াতে পারে। এসব খাত থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হতে পারে ১লাখ ৪০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।  

সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত বলেন, সম্পদ কর থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা, অর্থপাচার রোধ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ও কালোটাকা উদ্ধার থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ঘাটতি অর্থায়নের বন্ড মার্কেট ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব নতুন উৎস থেকে ১লাখ ৪৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। যা মোট রাজস্ব প্রাপ্তির ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

অর্থনীতি সমিতির বাজেট প্রস্তাবে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে, ৯ লাখ ৯০ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট বাজেট বরাদ্দের প্রায় ৮১ শতাংশ যোগান দেবে রাজস্ব খাত। বাকি ১৯ শতাংশ অর্থাৎ ঘাটতি অর্থায়নের (১ লাখ ২৫ হাজার ৫৮০ কোটি) যোগান দেবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব খাত। ৪৫ হাজার কোটি টাকা আসবে বন্ড মার্কেট থেকে, ৬০ হাজার কোটি টাকা আসবে সঞ্চয়পত্র থেকে ও দেশীয় ব্যাংক থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা। এভাবে অর্থসংগ্রহ করতে পারলে ঘাটতি অর্র্থায়নে কোন বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করতে হবে না। গত অর্থবছরে ঘাটতি পূরণে ৪৩ শতাংশ গ্রহণ করতে হয়েছিল।
 
অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত এই বাজেট বাস্তবায়ন করা গেলে উন্নয়ন-অনুন্নয়ন বাজেট বরাদ্দের অনুপাত হবে ৫৫:৪৫। বর্তমান উন্নয়ন-অনুন্নয়ন বরাদ্দের (৩৯:৬১) তুলনায় উন্নয়ন বরাদ্দ ৪ দশমিক ৩ গুণ বেড়ে উন্নয়ন বরাদ্দ হবে ৬লাখ ৬৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।  

‘অনুন্নয়ন বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হবে ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। ফলে আয়কাঠামোতে বিত্তশালী ও ধনীদের ওপর করের বোঝা অতীতের তুলনায় অনেকগুণ বেড়ে যাবে। এতে সমাজে ধন-বৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য ও ক্রমবর্ধমান অসমতা হ্রাস পাবে।
 
বাজেট প্রস্তাবনায় শিক্ষা ও প্রযক্তি, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ, বিদ্যুত ও জ্বালানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, ও বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাবদ ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি।  
 
অনুষ্ঠানে সমিতির অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
এসই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।