ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

ফুটবল

‘বাফুফের অদূরদর্শিতায় দেশের ফুটবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২০
‘বাফুফের অদূরদর্শিতায় দেশের ফুটবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’ তরফদার মো. রুহুল আমিন

করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে দেশের সবধরনের ফুটবল স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলও। কিন্তু এরপর প্রায় দুই মাস পার হয়ে গেলেও পরবর্তী কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ফলে আর্থিক ক্ষতি ও ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে ক্লাবগুলো। 

বাফুফের এই অদূরদর্শিতা দেশের ফুটবলকেই ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিডিএফ) মহাসচিব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফসিএ) সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন।

শুক্রবার (১৫ মে) এক ভিডিও বার্তায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক ও সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, 'বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে অচলাবস্থা চলছে।

গত মার্চ মাসে যখন লিগ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হলো, তখনই কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল যে লিগটা এ বছর চালানো যাবে কি না। এ বিষয়ে দূরদর্শিতা দেখিয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। '

তিনি আরও বলেন, 'যখন সারা বিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল এবং এর প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন লিগগুলো যখন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল কিংবা পিছিয়ে দেওয়া হলো। বাংলাদেশও তো এর ব্যতিক্রম না। এসব বিচার বিশ্লেষণ করেই একটা সিদ্ধান্তে আসা উচিত ছিল যে এ বছর লিগ হয়তো খেলা হবে না কিংবা এ বছর আমরা লিগ চাই না। ' 

কিছুদিন আগে লিগ কমিটির বৈঠকে ক্লাবগুলোর মধ্যে আলোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সর্বশেষ লিগ কমিটির বৈঠকে সবাই বললেন যে এ বছর তারা কেউ লিগ চান না। কারণ এই করোনা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বুঝতে পারছি না। কিন্তু ফুটবল ফেডারেশনের অদূরদর্শিতার জন্য আজ ক্লাবগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতি ক্লাবকেই চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের বেতন দিতে হচ্ছে। প্রত্যেক ক্লাবের লাখ লাখ ডলার চলে যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের ফুটবল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। '

এমন অচলাবস্থার কারণে দেশের ফুটবলের প্রভূত ক্ষতির ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে এই ক্রীড়া সংগঠক বলেন, 'বাংলাদেশের ফুটবল তো এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। তারপরও যদি ক্লাবগুলো এভাবে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দেশের ফুটবলই কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই কালবিলম্ব না করে আমরা চাই, বাফুফে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিক যে এ বছর লিগ হবে না কিংবা পিছিয়ে পরবর্তী মৌসুমে চলে যাবে। তখন আবার সবকিছু নতুন করে শুরু করা যাবে। '

তিনি আরও বলেন, 'আমরাও চাই বাংলাদেশে ফুটবল মাঠে ফিরুক। কিন্তু এই অবস্থায় যেখানে লকডাউন চলছে, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, প্রতিদিন লোকজন মারা যাচ্ছে এর দায় দায়িত্ব কি বাফুফে নিতে পারবে? এই যে কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে লিগটাকে ঝুলিয়ে রাখা হলো, ক্লাবগুলোর যে কোটি কোটি টাকা নষ্ট হলো, এর দায়িত্ব কে নেবে? বাফুফে কি এই টাকার দায়দায়িত্ব নিতে পারবে? তারা নেবে না। ফলে দেশের ফুটবলের ক্ষতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবার চিন্তা করা উচিত।  

বাফুফের প্রতি বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, 'ফুটবল ফেডারেশনকে এই অদূরদর্শিতা পরিহার করে বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তাহলে বাংলাদেশের ফুটবল এগিয়ে যাবে। দেশের ফুটবল আর কোথায় আগাবে? র‍্যাংকিংয়ে প্রায় ২০০ ছুঁইছুঁই। ১২ বছরে ফুটবলের বারোটা বেজে গেছে। এখনও যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না দেওয়া হয় তাহলে দেশের ফুটবলকে তলানি থেকে আর তুলে আনা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। '

করোনাকালে দেশের ফুটবলের এমন সংকটময় মুহূর্তে এগিয়ে এসেছেন তরফদার মো. রুহুল আমিন। এরইমধ্যে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গঠন করা ফান্ডে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ২৫ লাখ টাকা জমা হয়েছে।  

ফান্ডে জমা হওয়া অর্থ দিয়ে ৬৪ জেলার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১ম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ এবং তৃতীয় বিভাগের দলগুলোর মাধ্যমে তালিকা নিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়া প্রায় ২০০ ফুটবল কোচকে সহায়তা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন>> ২০০ ফুটবল কোচকে ২৫ লাখ টাকা সহায়তা রুহুল আমিনের

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।