ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

বোলার মুমিনুল, মেজাজি মুমিনুল

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৭
বোলার মুমিনুল, মেজাজি মুমিনুল বল করছেন মুমিনুল। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থেকে: এমনটা নয় যে মুমিনুল হক দেশের হয়ে আগে বোলিং করেননি। তবে সোমবারেরটা মনে হয় একটু স্পেশাল। দেশের জার্সি তো বটেই, ‘লিস্ট-এ’ ম্যাচ মিলিয়েও ক্যারিয়ার সেরা বোলিংটা এদিনই আসল তার বাঁ-হাত থেকে।

একে তো ঘরের মাঠ, অন্যদিকে দলের অধিনায়ক। তাতেই যেন ষোলআনার মুমিনুলকে পাওয়া গেল।

হংকং ইনিংসের তখন ২৭ তম ওভার। মুমিনুল বল নিতেই গ্যালারিতে তুমুল হর্ষধ্বনি। ‘মুমিনুল, মুমিনুল’ বলে উচ্ছ্বাসের মিছিল। দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিতে দেরি করলেন না। ওই ওভারের তৃতীয় বলেই ফেরালেন উইকেটে জমে যাওয়া বাবর হায়াতকে।

নিয়াজাত খানকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবর। কিন্তু মুমিনুল হকের বলে তিনি এলবির শিকার হওয়ার পরই হংকংয়ের ইনিংসটা যেন তাসের ঘর। ৩৭ রানে বাবর যখন ফেরেন দলীয় সংগ্রহ তখন ৯৮ রান। এরপর হংকংয়ের ইনিংসে রান বাড়ল আর মাত্র ২৭।

শুধু বাবরকে ফিরিয়ে থামেননি মুমিনুল। পরে আরও তিন ওভার বল করে ফিরিয়েছেন জাথা আর ওয়াকাস বারাখাতকে। সবমিলিয়ে চার ওভারে ১১ রান দিয়ে তুলে নেন এই তিন উইকেট।

পরে ব্যাটিংয়ে নেমেও খারাপ করেননি বাংলাদেশের টেস্টের তিন নাম্বার। উইকেটে এসেই চার মেরে রানের খাতা খুলেন মুমিনুল হক। মাত্র ১৪ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কার বিনিময়ে করেন ২১ রান।

আজ অলরাউন্ডার মুমিনুল হককে যেন পুরোপুরি আবিষ্কার করা গেল। আরও একটা জিনিস দেখা গেল মাঠে।

মুমিনুল মানেই সবসময় শান্ত, কম কথা বলা। মেজাজ শব্দটাও যেন তার ডিকশনারিতে নেই-এটাই জানা ছিল সবার। কিন্তু আজ মেজাজি মুমিনুলকেও পাওয়া গেল।

 আজ মেজাজি মুমিনুলকেও পাওয়া গেল।  ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

এহসানের বলে বাবর হায়াতকে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরছিলেন শান্তভাবেই। আউট হওয়ায় কোনো প্রতিক্রিয়াও দেখালেন না। কিন্তু এগিয়ে এসে ‘বাজে’ কিছু একটা বলে বসলেন এহসান। তাতেই কেল্লাফতে। মানতে পারলেন না মুমিনুল, তেড়ে গেলেন এহসানের দিকে। পরে আম্পায়ার এসে শান্ত করেন মুমিনুলকে।

কিন্তু ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি না হওয়ায় মুমিনুলের মুখ থেকে শোনা গেল না পুরো ঘটনা। তবে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ সাইফ হাসান দলের প্রতিনিধি হয়ে এসে শোনালেন সেই কথা।

ওই সময় মুমিনুলের বিপরীতে নন স্টাইকিংয়ে ছিলেন সাইফ। তিনি বলেন, ‘মুমিনুল ভাই আউট হয়ে ফিরছিলেন। এই সময় বোলার এসে তাকে স্লেজিং করেন। তবে এটা বেশি কিছু না। খেলার অংশ। ’ তবে ম্যাচ শেষে এখানে ওখানে কান পেতে যা শোনা গেল-মুমিনুলকে বেশ অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন বোলার এহসান।
 মুমিনুল

ওহ আরেকটা কথা বলা হয়নি। বাংলাদেশ-হংকং ম্যাচ মাত্র ৫৩ ওভারেরও কমে শেষ হলেও পাশের দ্বিতীয় একাডেমি মাঠে তখনও চলছে পাকিস্তান-নেপাল ম্যাচ। ম্যাচ শেষে তাই সেই মাঠে হেঁটেই গেলেন মুমিনুল হকসহ অন্যরা। অন্যদের নিয়ে সেই ম্যাচ দেখলেন মুমিনুল হক। সেই ম্যাচ নিয়েও মুমিনুল হকের যথেস্ট আগ্রহ দেখা গেল।

যাবারই কথা, মঙ্গলবার এই মাঠে নেপাল আর ৩০ তারিখ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। তাই হয়তো দুই প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আগেভাগে জেনে নেওয়া! কেননা, বাংলাদেশ দলটার অধিনায়কের নামও যে মুমিনুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ২৭ মার্চ, ২০১৭

টিএইচ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।