মাদারীপুরে মাদরাসা শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার সময় তানহা আক্তার (১০) নামে এক ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
বিষয়টি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাসপাতাল গেটের তালা ভেঙে লাশ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনরা।
নিহত তানহা মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের মিঠাপুর এলাকার সামির সরদার সানি’র মেয়ে এবং স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ির ভেতর স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষক মওলানা মোহাম্মদ ইমরানের কাছে প্রাইভেট পড়ছিল শিশু তানহা। এ সময় হঠাৎ তার পায়ে বিড়ালে কামড় দেয় বলে পরিবারের লোকজনের ধারণা। মুহূর্তেই পা থেকে রক্তপাত শুরু হলে অসুস্থ হয়ে পড়ে তানহা। গুরুতর অবস্থায় মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হয় মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতালের চিকিৎসক তানহাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় পরিবারের লোকজন চিকিৎসককে জানায় মেয়েটিকে সাপে কামড় দিয়েছে। এই দুই কারণে সন্দেহ হলে থানা পুলিশকে খবর দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে পুলিশ এসে নিহতের লাশ সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা শুরু করলে শুরু হয় উত্তেজনা। একপর্যায়ে নিহতের স্বজনরা হাসপাতালে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে মেয়েটির লাশ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সুরাতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
মেয়েটির বাবা সামির সরদার ওরফে সানি বলেন, ‘আমার মেয়ে মারা গেছে, তার লাশ আমরা দ্রুত বাড়ি নিয়ে যেতে চাই। আমাদের কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। ’
মাদরাসার শিক্ষক মওলানা মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ‘আমি প্রাইভেট পড়াচ্ছিলাম, এমন সময় তানহা চিৎকার শুরু করে। পাশে একটি বিড়াল দেখতে পাই। পা থেকে রক্ত বের হলে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে শুনি মেয়েটি মারা গেছে। ’
মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সিহাব চৌধুরী জানান, 'শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। শরীরে সাপে কামড় দেওয়ার চিহ্ন নেই। তবে কয়েকটি আঁচড়ের দাগ পাওয়া গেছে। বিড়ালে কামড় দিলে এতো দ্রুত মারা যাওয়ার কথা নয়। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের জট তৈরি হয়েছে। ঘটনার কারণ মনয়াতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। ’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন জানান, ‘মাদরাসাছাত্রী নিহতের ঘটনা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। একবার পরিবার বলেছে সাপের কামড়ে মারা গেছে, আবার তারাই বলছে বিড়ালে কামড় দিয়েছে। স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএ