ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

নাটোরে জলাবদ্ধতা: কোমর পানি পেরিয়েই শিশুদের যেতে হয় স্কুলে

মো. মামুনুর রশীদ, ডিষ্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:২৫, আগস্ট ২৮, ২০২৫
নাটোরে জলাবদ্ধতা: কোমর পানি পেরিয়েই শিশুদের যেতে হয় স্কুলে জলাবদ্ধতার মধ্যদিয়ে যাতায়াত করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

নাটোরের সিংড়া উপজেলার শালমারা এলাকায় বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে সৃষ্ট হয়েছে জলাবদ্ধতা। আর এই জলাবদ্ধতার কোমর পানি মাড়িয়েই স্কুল ও মাদরাসায় যেতে হচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে।

এতে প্রতিদিন ভিজে যাচ্ছে শিশুদের জামা-কাপড় ও বই-খাতা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক-অভিভাবকরাও।

স্থানীয়রা জানান, সিংড়া উপজেলার শালমারা ধামাইচ ইসলামিয়া সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদারাসা এবং ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করছে। বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি বর্ষা মৌসুম এলেই কোমর পরিমাণ পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে শিশুদের নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে পৌঁছানো যেমন কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তেমনি শারীরিকভাবেও রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকি।

শিশু শ্রেণি ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভেজা পোশাক আর স্যাঁতসেঁতে বইখাতাসহ ক্লাসে উপস্থিত হয়। অনেকে আবার পথেই পড়ে যায় পানিতে। শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেখে স্কুলের দপ্তরি কাম প্রহরী হাবিল শেখ এবং কিছু অভিভাবক সন্তানদের কোলে করে স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ক্লাস শেষে আবার কোলে করেই বাড়ি ফিরিয়ে নিতে আসেন তারা। এতে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

স্থানীয় অভিভাবক রহিমা বেগম বলেন, গত প্রায় ১৫ দিন ধরে কোমর পানি জমে রয়েছে সড়কের ওপর। আমাদের ছেলে-মেয়েদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে। যদি এই সড়কটি দুই-তিন ফুট উঁচু করা হতো, তাহলে এমন কষ্ট থাকতো না।

স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কের সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। অথচ স্কুল, মাদরাসা ও এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য এটিই একমাত্র পথ। পানি নামার পরপরই সড়কটি সংস্কার করে উঁচু না করা হলে ভবিষ্যতে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।  

স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে এলাকাবাসীর দাবি, শিশুদের ভবিষ্যৎ ও এলাকার স্বাভাবিক জনজীবনের স্বার্থে এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রাব্বানী জানান, শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি এতটাই নিচু যে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। এখন বর্ষার শুরুতেই পুরো সড়কে কোমর পানি জমে আছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন পানির মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করছে, যা কেবল দুঃখজনক নয়, অত্যন্ত বিপজ্জনকও। এতে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার আগ্রহ কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে এবং নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখতে আমরা দ্রুত সড়কটি দুই থেকে তিন ফুট উঁচু করে সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, এলাকাবাসী অথবা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিত আবেদন করলে সরেজমিনে দেখে দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।