ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২, ২৪ জুন ২০২৫, ২৭ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির পর যুবকের লাশ উদ্ধার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৪৯, জুন ২৪, ২০২৫
সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলির পর যুবকের লাশ উদ্ধার উদ্ধার করা অস্ত্র এবং ইনসেটে নিহত যুবক

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হয়েছে। এ ঘটনার পর আবু সাঈদ (৩২) নামে এক যুবকের লাশ মিলেছে সেখানে।

সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে তাদের ফেলে যাওয়া গুলিসহ তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও একাধিক দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
 
সোমবার (২৩ জুন) ভোরে উপজেলার গাদালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
 
স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা একরার হোসেনের লোকজনের সঙ্গে প্রতিপক্ষ একই গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিকুর রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
 
গত শুক্রবার দুপক্ষের মধ্যে সশস্ত্র ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর ৫৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের শান্তিগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে অবৈধ অস্ত্র জব্দ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়।
 
বিষয়টি আঁচ করতে পেরে হাতিয়া থেকে সন্ত্রাসীরা ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে দুর্গম হাওর পথে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার গাদালিয়া গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই গ্রামে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি বন্ধ হলে আবু সাঈদ নামে এক রাজমিস্ত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসী।
 
আইএসপিআরের বক্তব্য
এদিকে ওই ঘটনা সম্পর্কে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও অস্ত্রের মহড়া চলতে থাকায় জননিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে গত ২২ জুন কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে একটি যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান চলাকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একরার হোসেন সমর্থিত সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে নৌকায় করে পালানোর চেষ্টা করে। সেনাবাহিনীর টহল দল ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা পার্শ্ববর্তী গাদিয়ালা গ্রামে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীকেও লক্ষ্য করে গুলি চালালে আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায় ও সন্ত্রাসীদেরকে প্রতিহত করে। পরে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থল থেকে মো. আবু সাঈদ (৩৫) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে।  

এ ছাড়াও চার সন্ত্রাসী তাজউদ্দীন, আমির উদ্দিন, হিরণ মিয়া ও জমির মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি একনলা বন্দুক, চারটি পাইপগান, এক রাউন্ড তাজা গুলি, ছয়টি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট এবং বেশ কিছু দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।  

আইএসপিআর জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা সাধারণ জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। আইন-বহির্ভূত যে কোনো কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাছের সেনা ক্যাম্প বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

এনইউ/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।