ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২, ০২ মে ২০২৫, ০৪ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলেও ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:৩৩, মে ১, ২০২৫
মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেলেও ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ

চাঁদপুর: মার্চ-এপ্রিল—এই দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরতে মধ্যরাত থেকেই নেমেছেন জেলেরা। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা নদীতে বিচরণ করেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।

ইলিশ না পেয়ে অনেক জেলে ফিরছেন খালি হাতে। তবে জেলেদের হতাশা কেটেছে পোয়া, শিলন, ভেলে, চেওয়া, ছোট চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার তরপুচণ্ডী ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে জেলেদের কর্মচাঞ্চল্যতা। কেউ মাছ ধরার জন্য নদীতে যাচ্ছেন, কেউবা জাল ঠিকঠাক করছেন। কেউ কেউ ধরে আনা মাছ পাড়েই বিক্রি করছেন।

আনন্দবাজার এলাকার জেলে সুজন দেওয়ান বলেন, তিনি গতকাল রাত ৩টায় নদীতে নেমেছেন। নৌকায় ছিলেন ৩ জন জেলে। সকাল ১০টায় মাছ ধরা শেষে পাড়ে এসেছেন। পেয়েছেন পোয়াসহ ছোট প্রজাতির মাছ। বিক্রি করেছেন ৪ হাজার ৮০০ টাকার।

একই এলাকার জেলে মিজানুর রহমান বলেন, ভোরে নেমেছিলেন নদীতে, উঠেছেন বেলা ১১টার দিকে। ছোট আকারের কয়েকটি ইলিশ ও পোয়া মাছ পেয়েছেন। বাজারে নিয়ে বিক্রি করে যা পাবেন, তা দিয়ে খরচই উঠবে। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাননি।

ছোট মাছের সঙ্গে ৮ কেজি ওজনের একটি পাঙাশ মাছ পেয়েছেন জেলে আরিফুর রহমান ঢালী। তিনি বলেন, ৪ জন মিলে নৌকা নিয়ে ভোরে নদীতে নেমেছিলেন, উঠেছেন বেলা ১১টার দিকে। পাঙাশসহ সব মাছ বিক্রি করেছেন ১৪ হাজার টাকায়। নিষেধাজ্ঞা শেষে যে পরিমাণ মাছ পাওয়ার কথা ছিল, সেই পরিমাণ মাছ জালে উঠেনি।

শহরের লঞ্চঘাট এলাকার জেলে বাচ্চু দেওয়ান বলেন, ভোরে নেমেছেন নদীতে। ইলিশ পাওয়া যায়নি, তবে পোয়া মাছ পেয়েছেন। তিনি বলেন, মাছ বিক্রি করে ২ হাজার টাকা পেয়েছেন।

একই এলাকার প্রবীণ জেলে মানিক খান বলেন, ভোরে নদীতে নেমে পাওয়া মাছ বিক্রি করেছেন দেড় হাজার টাকায়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নদীর জাটকাসহ ইলিশ সাগরের দিকে নেমে গেছে। তিনবার জাল ফেলে ছোট আকারের একটি ইলিশ পেয়েছেন। তবে এ বছর অভয়াশ্রম অনেক কঠোর ছিল। উজানের জেলেদের জাটকা ধরতে দেওয়া হয়নি।

এদিকে, চাঁদপুরের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছঘাট সকাল থেকেই ছিল অনেকটাই ফাঁকা। বেশ কয়েকটি আড়তে দেখা গেছে দেশীয় প্রজাতির পোয়া, বাটা, চিংড়িসহ কিছু মাছ।

চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, ইলিশ পরিভ্রমণশীল মাছ। সাগর থেকে নদীতে আসে, আবার সাগরে চলে যায়। আশা করি, জেলেরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবে। শুধু ইলিশ নয়, নদীর সব ধরনের মাছই মূল্যবান এবং জেলেরা তা পাচ্ছেন।

ইলিশের পোনা, জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এই সময় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ ছিল।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।