উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী উপজেলায় অসচ্ছল, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা ১৫ জন নারীর হাতে সেলাই মেশিন তুলে দিয়েছে দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক সংগঠন ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ’।
তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে তাদের এই সেলাই মেশিন উপহার দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে বেতাগী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকা থেকে আসা এসব নারীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে মেশিন তুলে দেওয়া হয়।
বেতাগী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেতাগী উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি ও প্রেসক্লাব সভাপতি মো. কামাল হোসেন খান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদার, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মো. মিজানুর রহমান খান, জামায়াতে ইসলামী বেতাগী উপজেলার সেক্রেটারি প্রভাষক মো. শাহাদত হোসেন মুন্না, বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফরোজা আক্তারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও মো. বশির গাজী বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ শুধু শিল্প-অর্থনীতির নয়, সামাজিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও মানবিক সেবার ক্ষেত্রে তাদের কাজ প্রশংসনীয়। আজকের এই সেলাই মেশিন উপহার সেই মহতী প্রয়াসেরই অংশ।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল সিকদার বলেন, এমন উদ্যোগ নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলে। এই কর্মসূচি নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক অগ্রগতিতে বড় অবদান রাখবে।
পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মিজানুর রহমান খান বলেন, শুভসংঘের সদস্যরা সমাজের উপেক্ষিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, তা অনুকরণীয়।
অনুষ্ঠান শেষে এক আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয়, যখন সেলাই মেশিন হাতে পেয়ে কেঁদে ফেলেন পুটিয়াখালী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন। সে বলে, আমার বাবা নেই। এই সেলাই মেশিন দিয়ে আমি আয় করতে পারবো, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবো।
বিধবা কিংবা স্বামী পরিত্যক্তা এই ১৫ নারীর চোখে-মুখে ছিল আত্মবিশ্বাসের দীপ্তি। কারও মুখে হাসি, কারও চোখে অশ্রু তবে সবার মনে আশার আলো।
বসুন্ধরা শুভসংঘের বেতাগী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন বলেন, আমরা শুধু সহযোগিতা করছি না, তাদের দক্ষ করে তোলার ব্যবস্থা করছি। প্রশিক্ষণ শেষে সবাইকে একটি করে সেলাই মেশিন উপহার দেওয়া হচ্ছে, যেন তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে এমন মানবিক কার্যক্রম সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমি বসুন্ধরা শুভসংঘকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আরএ