ঢাকা, সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

জুলাইয়ে পুলিশের মার, পরে স্ট্রোক— অর্থাভাবে বন্ধ সাংবাদিক শামীম মামার চিকিৎসা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৫৬, জুলাই ১৪, ২০২৫
জুলাইয়ে পুলিশের মার, পরে স্ট্রোক— অর্থাভাবে বন্ধ সাংবাদিক শামীম মামার চিকিৎসা

বরিশালের সাংবাদিক মহলে পরিচিত মুখ ফটোসাংবাদিক শামীম আহমেদ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে জীবন কাটাচ্ছেন চরম দুর্দশায়।

২০২৪ সালের ৩১ জুলাই বরিশালে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জের ছবি তুলছিলেন গুরুতর আহত হন শামীম আহমেদ, যিনি স্থানীয় সাংবাদিক মহলে ‘শামীম মামা’ নামে ব্যাপক পরিচিত।

সেইদিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কাভার করতে গিয়ে পুলিশের নির্মম হামলার শিকার হন তিনি ও আরও কয়েকজন সাংবাদিক।

সেদিনের স্মৃতি তুলে ধরে শামীম বলেন, পুলিশ যখন আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল, আমি ছবি তুলছিলাম। সেই দায়ে আমাকেও নির্মমভাবে লাঠিপেটা করে। আমি পড়ে যাই, তবুও তারা মারতে থাকে। এটা কোনোভাবেই পেশাদার আচরণ ছিল না। অপেশাদার ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।

আহত হওয়ার পর তিনি ভর্তি হন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিছুদিন পর আঘাতের জের ধরে স্ট্রোক করেন দৈনিক যুগান্তরের বরিশাল অফিসের ফটোসাংবাদিক শামীম আহমেদ। এরপর থেকেই তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত।

তিনি বলেন, হামলার ঘটনার পর চিকিৎসা নিয়ে ব্যথা ঘুঁচিয়েছি ঠিকই কিন্তু নতুন করে নতুন বাংলাদেশে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। কারণ ওই ঘটনার কিছুদিন পরই স্ট্রোক করে বিছানায় পড়ে যাই। সে থেকে এ পর্যন্ত অর্থাভাবে চিকিৎসা ব্যয় সঠিকভাবে চালাতে পারিনি।

বর্তমানে শামীম আহমেদ শয্যাশায়ী, কথা বলতেও কষ্ট হয় তার। চোখে-মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।

তার মেয়ে সাহারা আহমেদ বলেন, আমার আব্বু ছাড়া পরিবারের উপার্জনের কেউ নেই। নিয়মিত থেরাপি চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছি না টাকার অভাবে। সরকারের সাহায্য ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারবো না।

৩১ জুলাই ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, লাঠিচার্জকারী টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) তানভীর আরাফাত। সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জকারী পুলিশ সদস্যের কাছেই ছিলেন তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের লাঠিচার্জ করতে নিবৃত্ত করেননি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিকদের গালিগালাজও করেন।  

সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সাহায্যের দাবি জানিয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরু বলেন, জুলাই আন্দোলনে শামীম আহমেদ কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের হাতে আহত হন। এখন তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তার চিকিৎসা ও পরিবার চালানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই। সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।

এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ এর সর্বশেষ