বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বনের অভ্যন্তরে করমজল, সুপতি, ভোলা, কটকা, দুবলা এলাকায় ৫টি মিস্টি পানির পুকুর লবণ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
বনের শ্যালার চর এলাকা থেকে ভেসে যাওয়া একটি হরিণ শাবক উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে দুবলার চর এলাকা থেকে দুটি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করেছে বনরক্ষীরা।
বুধবার (২৮ মে) রাত থেকে শুক্রবার (৩০ মে) সকাল পর্যন্ত বাগেরহাটে নিরবচ্ছিন্ন বৃষ্টি ও মাঝারি ধরনের ঝড়ো হাওয়ার ফলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় শক্তির ফলে এবার আমাদের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ৫টি পুকুরে লবণ পানি নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে বন্যপ্রাণীদের পানি খাওয়ায় সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে।
এছাড়া পানির তোরে ভেসে যাওয়া অবস্থায় আমরা একটি হরিণ শাবক উদ্ধার করেছি। দুবলার চর এলাকা থেকে দুটি মৃত হরিণ উদ্ধার করে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ধারণা করছি, সাঁতরাতে গিয়ে লবণ পানি খেয়ে হরিণ দুটির মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, লবণ পানিতে নিমজ্জিত হওয়া পুকুরগুলোর পানি বন্যপ্রাণী ছাড়াও বন বিভাগের স্টাফরা ব্যবহার করেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে বৃষ্টিতে পুকুরের পানি মিস্টি না হলে সেচের মাধ্যমে মিস্টি পানি সরবরাহ করা হবে বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।
এদিকে বলেশ্বর ও ভোলা নদীর পানিতে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের মূল বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী-বগী ভারাণী খালের পাশের রিং বাঁধের দুটি স্থানের ১০০ ফুট ভেঙে গেছে। ভাঙা বাঁধ দিয়ে প্লাবিত হয়েছে লোকালয়।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, জোয়ারের পানির চাপে খুড়িয়াখালী গ্রামের চুন্নু ফকিরের বাড়ির সামনে থেকে ৬০ ফুট এবং শাহজাহান মোল্লার বাড়ির সামনে থেকে ৪০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। ভাঙন বাঁধ দিয়ে দিনে জোয়ারে পানি ঢুকে শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি প্লাবিত হচ্ছে। দুর্যোগ কেটে গেলে সরকারি বরাদ্দ থেকে ভেঙে যাওয়া অংশ মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। তবে এবারের ঝড়ে বাগেরহাটে বসত বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আমরা খোঁজ নিয়েছি। এবার জেলায় কোনো বসত ঘরের ক্ষতি হয়নি।
মৎস্য ঘেরেরও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আবুল কালাম আজাদ।
আরএ