ঢাকা, শনিবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৭

রাজনীতি

দেশের জনগণ স্বাধীন রাষ্ট্রে মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে চায়: জামায়াত আমির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৫৬, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫
দেশের জনগণ স্বাধীন রাষ্ট্রে মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে চায়: জামায়াত আমির বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের জনগণ স্বাধীন রাষ্ট্রে মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে চায়। কিন্তু অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ তৈরি করতে পারিনি।

জনগণের সহযোগিতা ও আল্লাহর সাহায্যে আমরা এ পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে চাই।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এফডিইবি)-এর উদ্যোগে রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত (এফডিইবি) এর বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, দেশে কুখ্যাত ‘আয়নাঘর’সহ গোপন নির্যাতন কেন্দ্রের সংস্কৃতি প্রবর্তন করা হয়েছে, যা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে কখনো ছিল না।

তিনি বলেন, অসংখ্য শহীদের ত্যাগের বিনিময়ে এ দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা তারা স্বাধীন নাগরিক হিসেবে মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে, তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা থাকবে, যুবকেরা কাজ পাবে। কিন্তু আজও আমরা সে বাস্তবতা তৈরি করতে পারিনি। এখন আমাদের ব্যর্থতার ইতিহাস থেকে সফলতার ইতিহাস রচনা করতে হবে।

শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে আমিরে জামায়াত বলেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নৈতিকতাহীন, অকার্যকর এবং মেধা, সময় ও অর্থের অপচয় ঘটাচ্ছে। যাদের হাতে শিক্ষা পরিকল্পনা করার দায়িত্ব, তাদের সন্তানরা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়ে না। এ কারণেই তারা জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে না।

তিনি প্রকৌশল ও কৃষি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বুয়েট ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীরা জাতির গর্ব। কৃষিবিদরা মৎস্য, পশুপালন ও খাদ্য উৎপাদনে যে অবদান রেখেছেন, তাতে দেশ সরাসরি উপকৃত হচ্ছে। পর্যাপ্ত গবেষণা তহবিল পেলে এ খাত আরও এগিয়ে যাবে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, যারা সবচেয়ে মেধাবী, তারা প্রকৌশল খাতে কাজ করলেও জাতি কেন এর সুফল পাচ্ছে না? বাংলাদেশ প্রকৌশল খাত পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে তিনি পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করেন- পরিকল্পনার অভাব, পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, ভিশনের অভাব, সাহসের অভাব এবং প্রচেষ্টার অভাব।  

তিনি বলেন, আমরা চাই ঘুণেধরা বাংলাদেশকে বদলে দিতে। পাঁচ বছরে হয়তো বুলেট ট্রেন চালাতে পারবো না, কিন্তু এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দ্বিতীয় অঙ্গীকার হলো দুর্নীতির জোয়ার কেটে দেওয়া। ইনসাফের ভিত্তিতে যার যা পাওনা, তা তার হাতে তুলে দেওয়া হবে। ঘুষ ও অবৈধ সম্পদের অবসান ঘটাতে হবে। এতে জাতির অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।

তিনি সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মিডিয়া জাতির দর্পণ, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলতে হবে- সেটি আমাদের বিরুদ্ধে হলেও। রাজনীতিবিদদের দুটি আর সাংবাদিকদের তিনটি কলিজা লাগে। সত্য ও সাহসী সাংবাদিকতাই জাতিকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পারে।

জামায়াত আমির আরও বলেন, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের দায়িত্ববোধ মর্যাদার চেয়ে বড় হতে হবে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, ক্ষমতায় গেলে জনগণকে অধিকার আদায়ে রাস্তায় নামতে হবে না; ইনসাফের ভিত্তিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।

তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিজেদের দোষত্রুটি নিয়ে কামড়াকামড়ি না করে ইতিবাচক কর্মসূচি ও গঠনমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে জাতিকে আশার আলো দেখাতে হবে। আমাদের তিনটি মৌলিক অঙ্গীকার হলো- শিক্ষা সংস্কার, দুর্নীতি দমন এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এ তৌফিক দান করুন।

টিএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।