ঢাকা: আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃত্বে গঠন হচ্ছে তিনটি রাজনৈতিক ব্লক।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপি’র মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আপাতত রাজনৈতিক সিনারিওতে তিনটা ব্লক হতে যাচ্ছে। একটা ইসলামিক ব্লক অলরেডি হয়ে গিয়েছে। আরেকটা হলো বিএনপির নেতৃত্বে একটা ব্লক হচ্ছে। আরেকটা হলো আমাদের নেতৃত্বে একটা ব্লক হচ্ছে। তো সেখানে আমরা যেহেতু বিএনপি না, এজন্য বিএনপির ব্লকেও যাচ্ছি না। আমরা যেহেতু জামায়াত না, এজন্য জামায়াতের ব্লকেও যাচ্ছি না। আমরা স্বতন্ত্র। আমরা এ গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা ইশতেহার দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম যে যেহেতু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলুপ হয়নি, আমাদের সামনে দীর্ঘ লড়াই রয়েছে। ফলত ওই জায়গা থেকে গত ১৫ বছরে যে তরুণরা আন্দোলন করেছিল অনেকেই দল সৃষ্টি করেছিল তারা অনেকেই সম্মত হয়েছেন এনসিপির ব্যানারে যোগ দেওয়ার জন্য। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চলমান রেখেছি। এটা আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আমরা একসঙ্গে একত্র হয়ে কাজ করব। কিন্তু কী প্রক্রিয়াতে এটা হবে সে বিষয়ে এখনো কথাবার্তা চলছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, পার্লামেন্ট যেটা হবে, সরকারি দল, বিরোধী দল পলিসিগত জায়গায় থাকবে। একটা জায়গায় পার্লামেন্ট হবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এবং জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে। ফলে এই পার্লামেন্টে এবং এটাও আমরা কনসিডারেশনে রেখেছি যেখানে যারা তরুণরা দাঁড়াবে যারা গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল, বিএনপি থেকেও যে তরুণ সমাজরা অংশগ্রহণ করেছে, আমরা তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় যারা ভালো মানুষ, তাদের প্রতি আমরা মৌন সাপোর্ট দিব। এটা দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট করতে চাই আগামীর যে সংসদটা হবে এখানে আওয়ামী লীগ থাকবে না, জাতীয় পার্টি থাকবে না। এবং এটা দীর্ঘদিন ধরে আমরা বলে আসছি... বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি হারিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে আপনারা একত্র হলে কোনো প্রতীক থাকছে- এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপির এই নেতা বলেন, দলের নাম এনসিপি থাকবে, এনসিপির প্রতীকেই থাকবে। অন্য দলের নাম মার্কা ডিজলভ হবে এবং এনসিপির আন্ডারে আরও অনেকগুলো দল আসতেছে। এটা আমরা বড় ধরনের একটা পার্টি করতে যাচ্ছি। ফলে অনেক দল অনেক মত অনেক ব্যানার ইনশাল্লাহ এনসিপির ব্যানারে চলে আসবে।
তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। আমরা উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) চাই। আমরা নিম্ন কক্ষে পিআর চাই না। আমি তো বলেছিলাম যে ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশন হবে কিনা স্টিল কনফিউশন আছে। সরকার অনেক ইনসিস্ট করতেছে ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশন করার জন্য সবাইকে। কিন্তু আমাদের যে জুলাই সনদটা রয়েছে এটার লিগাল যে পার্সপেক্টিভ সেই জায়গা থেকে এখনো কোনো সলিউশন হয় নাই। আমাদের দুইটা লড়াই রয়েছে এখানে। একটা হলো আমাদের সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং দ্রুতগতিতে আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যেতে হবে। অনেকেই বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করে থাকে যে জামায়াত ইলেকশন চায় না, এনসিপি ইলেকশন চায়না এগুলো হলো তাদের একটা প্রোপাগান্ডা। যদি বাংলাদেশে অতি দ্রুত গতিতে সুন্দর একটা ইলেকশন কেউ চেয়ে থাকে সেটা সবার আগে এনসিপি চাইবে। কারণ আমরা ভোট দিতে পারি নাই। আমরা যত ভোট দ্রুত দিতে পারব ততই আমরা বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে পারবো।
বিএনপির-জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে পাটওয়ারী বলেন, সংশয়ের জায়গাটা হলো বিএনপি এবং জামায়াত যে দলগুলো আছে অথবা এক্সিস্টিং পলিটিক্যাল পার্টি তারা কিন্তু জুলাই সনদের যে লিগাল এসপেক্ট, সেই জায়গাটা এক্সিকিউশন লেভেলে আসতছে নাতো। তাদের কারণে নির্বাচনটা ডিলে হচ্ছে। এই দুটি দলের কারণে নির্বাচনটা ডিলে হচ্ছে বিলম্বিত হচ্ছে। আমরা দুটি দলের কর্মী সমর্থক নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাবো, আপনাদের কাছে মাফ চাই জাতির দিকে তাকিয়ে হলেও আপনারা এইসব ভন্ডামি বাদ দেন। এটলিস্ট জনগণের দিকে তাকিয়েও হলেও দ্রুত এটার লিগাল পারস্পেক্টিভ এক্সিকিউশন লেভেলে এসে একটা নির্বাচনের মধ্যে এসে জনগণকে আপনারা মুক্তি দেন। আমাদের জিওপলিটিক্যাল জায়গা থেকে ইন্টারন্যাশনাল ফোরামে আমাদের বাংলাদেশ এখন সংকটের জায়গায় রয়েছে। এজন্য আমরা এই দু’টি দলকে আহ্বান জানাবো যে আপনারা নির্বাচনের ক্ষেত্রে জুলাই সনদে দ্রুত সাইন করুন। এটাকে এক্সিকিউশন লিগাল ওয়েতে নিয়ে য়েয়ে দ্রুত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে জনগণকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিন।
এ সময় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা উপস্থিত ছিলেন।
ইইউডি/জেএইচ