ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২, ০৬ মে ২০২৫, ০৮ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

ধর্ষণ-হত্যার শিকার জুঁইয়ের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:১৮, এপ্রিল ১৬, ২০২৫
ধর্ষণ-হত্যার শিকার জুঁইয়ের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

নাটোরের বড়াইগ্রামে ধর্ষণের পর নির্মম হত্যার শিকার জুঁই খাতুনের (৭) পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।  ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পাঠিয়েছেন তিনি।

 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত ১টার দিকে তার নির্দেশে নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের মিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল গারফা গ্রামে ওই পরিবারের বাড়িতে ছুটে যান।  

এসময় তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তারা তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা দেন এবং আইনিসহ সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। নিহত শিশুর মা মোমেনা খাতুন অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।  

আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, জুঁইয়ের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি থেকে আরও একটি প্রতিনিধি দল আসবে এবং আরও সহায়তা করা হবে।  

তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জুঁইয়ের পরিবারের সব দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে পাশে থাকার আশা ব্যক্ত করেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পহেলা বৈশাখের দিন সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে নতুন জামা পড়ে প্রবাসে থাকা বাবাকে ভিডিও কলে দেখিয়েছিল সাত বছর বয়সী জুঁই খাতুন। মুখে মেখেছিল নানা প্রসাধনী, এতে খুশি হয়েছিলেন বাবা জাহিদুল ইসলামও। মেয়ে আর বাবার মধ্যে কিছুটা খুনশুটি চলার পর কথা শেষ করে সারাদিন ঘোরাঘুরি করে জুঁই।

সন্ধ্যায় প্রতিবেশী দাদির বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বের হয় শিশুটি। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও বাসায় ফিরেনি জুঁই। শেষে পর্যন্ত বাড়ির অদূরেই একটি ভুট্টা ক্ষেতে পাওয়া মিলে শিশুটির নিথর মরদেহ। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম ও পাবনার চাটমোহর থানার সীমান্তবর্তী এলাকায়।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পার্শ্ববর্তী পাবনার চাটমোহর উপজেলার রামপুর গ্রামের একাট ভুট্টা ক্ষেত থেকে জুঁইয়ের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে সকালের দিকে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে পুলিশে খবর দিলেও ঘটনাস্থল নিয়ে নাটোরের বড়াইগ্রাম ও পাবনার চাটমোহর থানা পুলিশ দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে। পরবর্তীতে স্থান নিশ্চিত হওয়ার পর চাটমোহর থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর মুখমণ্ডল ঝলসে দিয়ে এ স্থানে ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা।  

নিহত জুঁই বড়াইগ্রামের চান্দাই ইউনিয়নের গাড়ফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. জাহিদুল ইসলামের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি হেফজখানার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল বলে জানা গেছে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, জুঁইয়ের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় হলেও মরদেহটি পাওয়া যায় সীমান্তবর্তী পাবনার চাটমোহর থানায় এলাকায়। ফলে সংঘটিত অপরাধটির মামলা চাটমোহর থানায় লিপিবদ্ধ হবে। কিন্তু দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় আনতে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশও যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে। ইতোমধ্যে দুর্বৃত্তদের অনুসন্ধানে পুলিশ মাঠে নেমেছে।  

এ ব্যাপারে পাবনার চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুরুল আলম বাংলানিউজকে জানান, পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে জুঁইয়ের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। কারা, কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২৫
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।