ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সরকারের আশ্রায়ণের ঘর নিয়ে বিপাকে নারী ভিক্ষুক ও ছেলে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২২
সরকারের আশ্রায়ণের ঘর নিয়ে বিপাকে নারী ভিক্ষুক ও ছেলে

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌরসভায় সরকারের আশ্রায়ণ প্রকল্পের(খ শ্রেণি) ঘর পেয়েও সেখানে বসবাস করতে পারছেন না স্থানীয় রতন শেখ নামে এক ব্যক্তি। প্রতিবেশি জমির মালিকরা সরকারের দেওয়া ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দেওয়াল নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, ভূঞাপুর পৌরসভার রতন শেখ নাবালক থাকা অবস্থায় তার বাবা জুলহাস শেখ মৃত্যুবরণ করেন। তার মা খুকি বেওয়া ভিক্ষাবৃত্তি করে টাকা জমিয়ে পশ্চিম ভূঞাপুর মৌজার বিআরএস দাগের ৩.৫০ শতাংশের কাতে ২ শতাংশ জমি কেনেন। সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের (খ শ্রেণিভুক্ত) আওতায় রতন শেখকে একটি কাঁচাপাকা ঘর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে সময় ওই ২ শতাংশ জমি খুকি বেওয়া তার ছেলে রতন শেখকে হেবা দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। সে লক্ষ্যে ওই জমিতে সরকার আশ্রায়ণ প্রকল্পের একটি কাঁচাপাকা ঘর নির্মাণ করে রতন শেখকে হস্তান্তর করে।

ওই জমির উত্তর পাশের প্রতিবেশি বাবু তালুকদার তার ২৪ শতাংশ ভূমি পরিমাপ করে দেওয়াল নির্মাণ করেন। এতে রতন শেখকে দেওয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দখল হয়ে যায়। ফলে সরকারের দেওয়া ওই ঘরে বসবাস করা রতন শেখ ও তার মায়ের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও কোন সুরাহা হয়নি।

স্থানীয় তোফাজ্জল তরফদার, খোকা শেখ, আছমা বেগমসহ অনেকেই জানান, প্রতিবেশি ধনাঢ্য পরিবারের হওয়ায় একটি ভিক্ষুক পরিবার আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েও বসবাস করতে পারছে না। এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়, মাতব্বরদের নিয়ে এলাকায় সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি।

রতন শেখ জানান, তার মা বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে টাকা জমিয়ে ওই জমি কিনেছেন। সরকার তাকে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর দিলেও তিনি ব্যবহার করতে পারছেন না। তিনি পৌর কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে বার বার ঘুরেও কোনো সুফল পাননি।  

জমির চারপাশে দেওয়াল নির্মাণকারী বাবু তালুকদার জানান, রতন শেখ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হলেও তার মা খুকি বেওয়া একজন ভিক্ষুক। তিনি সরকারের দেওয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দেওয়াল নির্মাণ করেননি। পরিমাপ করায় জমির সীমানা রতনের ঘরের অর্ধাংশ পর্যন্ত গেছে। মাপে যদি রতন শেখ জায়গা পান তাহলে অবশ্যই তিনি নিজ খরচে দেওয়াল ভেঙে সরিয়ে নেবেন।

ভূঞাপুর পৌরসভার কাউন্সিলর মো. শাহিনুজ্জামান শাহীন জানান, আশ্রায়ণ প্রকল্পের রতন শেখের ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে প্রতিবেশির দেওয়াল নির্মাণের বিষয়ে কয়েকবার ঘরোয়া বৈঠক হয়েছে। জমির পরিমাপগত ত্রুটির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার সার্ভেয়ারের মাধ্যমে পুনঃপরিমাপ করে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)মোছা. ইশরাত জাহান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। ভুক্তভোগী যদি প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন তাহলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।