ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীকে নিজ আঙিনার সবজি পাঠাতে চান আশ্রয়নের রহিমা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২২
প্রধানমন্ত্রীকে নিজ আঙিনার সবজি পাঠাতে চান আশ্রয়নের রহিমা

লক্ষ্মীপুর থেকে: নদীর পাড় ঘেঁষে সারি সারি রঙিন ঘর। বাড়িগুলোর সামনে শোভা পাচ্ছে সারি সারি ফুলের গাছ, নানারকম সবজি।

যেন সবুজের সমারোহ। রঙিন টিনের আধাপাকা ঘরগুলো দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। এ যেন এক খণ্ড শান্তির নীড়। এই নীড়েই সুখের স্বপ্ন গড়েছেন সহায়-সম্বলহীন রহিমা আক্তার।

কথা হলে রহিমা বাংলানিউজকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। তিনি ঘর দিয়েছেন, ঘর পেয়েছি। সেই ঘরের আঙিনায় সবজির চাষ করেছি, এখন সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য সবজি পাঠাতে চাই। '

বুধবার (২০ জুলাই) লক্ষ্মীপুর জেলার কমল নগর উপজেলার জয় বাংলা আশ্রায়ন প্রকল্পে কথা হয় তার সঙ্গে। রহিমা আক্তারের সঙ্গে আরও থাকেন শাশুড়ি জহুরা বেগম এবং শ্বশুর আলী হোসেন। এ আশ্রায়ন প্রকল্পের ১৩২ নম্বর ঘরে তাদের বসবাস।

রহিমা আক্তার বলেন, নদীতে সব ভেঙে নিয়ে গেলে আমরা সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়ি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর উপহার এই ঘর পেয়েছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, আমরা এখন বেশ ভালো আছি। নিজেরা হাঁস-মুরগী, ছাগল পালন করছি। আর বাড়ির আঙিনায় যতটা সবজি হয়, তা সবাই মিলে ভাগ করে খাই। তবে কষ্টও কিছু আছে। হাসপাতাল অনেক দূরে, বাচ্চাদের জন্যও কাছে একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। আমরাও তো চাই লেখাপড়া শিখে আমাদের সন্তানরা বড় অফিসার হোক। এছাড়া মসজিদ, কবরস্থানসহ আরও কিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সরেজমিনে জয় বাংলা আশ্রয়ন প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়, দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে এই মানুষগুলোকে। এর সঙ্গে আছে রান্নাঘর ও টয়লেট। আঙ্গিনায় হাঁস-মুরগি পালন ও শাক-সবজি চাষেরও জায়গাও আছে বেশ খানিকটা। এছাড়া নদীর পাড়ে হওয়ায় অনেকেই পালন করেন হাঁস। এখানে আশ্রয় পাওয়া পরিবারগুলোর অধিকাংশ পুরুষরাই যেখানে পেশায় জেলে, সেখানে বাড়ির নারীরাও নিজের প্রচেষ্টায় এগিয়ে নিচ্ছেন সংসার আর সন্তানদের। তাই দেখে অন্য ঘরহীন মানুষও আশা জাগায় মনে- তাদেরও একদিন এমন ঘর হবে! আর সেই ঘর উপহার দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

এমনই স্বপ্ন দেখা একজন নারী রেণু বেগম। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এই নারী বলেন, ‘এখানে আমার বোনের মেয়ে থাকে, ওর নাম বিবি জয়নাল। আমার ঘর তো নদীতে ভাসায়ে নিয়ে গেছে বাজান, তাই আমিও আবেদন করেছি এমন একটা ঘরের জন্য। আমারও এমন একটা সুন্দর ঘর হবে একদিন, এইটাই স্বপ্ন। ’

সার্বিক বিষয়ে কমল নগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, যে মানুষগুলো নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছেন, এখন ঘর পেয়ে তাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। আমরা তাদের জন্য এখানে কবরস্থান করার চিন্তা করছি। আমরা জায়গা রেডি করেছি। আমরা এখানে একটা মসজিদ করে দেব। তাদের মধ্যে এখন একটা কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট হচ্ছে। এখানে একটা প্রতিষ্ঠান আছে, আমরা খোলা একটু জায়গা রেখেছি, যেন সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো তারা এখানে করতে পারে। আমরা উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসন নিয়মিত তাদের দেখাশোনা করছি, খোঁজ-খবর রাখছি।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৮ ঘণ্টা, ২১ জুলাই, ২০২২
এইচএমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।