ঢাকা: আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে দেশের অর্জিত বিস্ময়কর সাফল্য ও কৃষিপণ্যের রপ্তানি সম্ভাবনা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে জোরেশোরে অগ্রসর হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে এক্সপোতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বিষয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব সায়েদুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক্সপোতে বাংলাদেশ নিজেদের উদ্ভাবন ও গ্রিন সল্যুশনস বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছে। দেশের মানসম্মত নিরাপদ শাক-সবজি, ফলমূল ও ফুলের এবং কৃষিপণ্যের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, স্টলে দেশের কৃষির বিভিন্ন সাফল্যের ওপর নির্মিত ১৩টি ডিজিটাল ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হচ্ছে। এক্সপোতে বাংলাদেশ দিবস পালন ও বিভিন্ন সাইড ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। এর মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টি ও ব্র্যান্ডিং তৈরির সুযোগ হবে। আমসহ অন্যান্য ফল, ফসল ও প্রসেসড ফুড ইউরোপে রপ্তানিতে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি অন্যান্য দেশের প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও জ্ঞান-অভিজ্ঞতা জানার ও তা বিনিময়ের সুযোগ তৈরি হবে।  

তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি দেশের এসিআই, প্রাণ গ্রুপ, হাশেম ফুডস, স্কয়ার ফুডস, গ্লোবপ্যাক ফুডস, বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস অ্যান্ড আ্যালাইড প্রডাক্টস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনসহ প্রায় ২০টির মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজ খরচে যাতায়াতসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এক্সপোতে অংশগ্রহণ করছে।  

কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক বলেন, এক্সপোতে প্যাভিলিয়ন প্রস্তুত, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, বাংলাদেশ দিবস উদযাপন, সমাপনী অনুষ্ঠান, প্যাভিলিয়ন পরিচালনাসহ সফলভাবে এক্সপোতে অংশগ্রহণের জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রতিনিধিদল গঠন করা হয়েছে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এক্সপো চলাকালীন (৬ মাস বা ১৮০ দিন) পর্যায়ক্রমে প্যাভিলিয়নে/নেদারল্যান্ডসে এক্সপোতে গমন করবেন এবং বিজনেস নেটওয়ার্কিং, দর্শনার্থীদের অভ্যর্থনা ও ব্রিফিং, প্যাভিলিয়ন ম্যানেজমেন্টসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, নেদারল্যান্ডসে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের প্যাভিলিয়নে কাজে লাগাতে নেদারল্যান্ডসের দূতাবাস কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে প্রতিদিন প্রায় ৭০০ থেকে ১২০০ দর্শনার্থী পরিদর্শন করছে। তারা বাংলাদেশের পণ্যের প্রতি বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছে এবং বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের নান্দনিক বৈশিষ্ট্যের ভূয়সী প্রশংসা করছেন।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সিবিশন প্রতি দশকে একবার নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত হয়। এবার বসেছে এক্সপোর ৭ম আসর। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘সবুজ নগর গড়ে তোলা’। এবারের এক্সপোটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ ফ্লোরিয়েড এক্সপোর হিসেবে ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ৬৮ শতাংশ মানুষ নগরে বাস করবে। নগরকে কীভাবে আরও সবুজ, সুন্দর ও বাসযোগ্য করা যাবে, সে বিষয়ে উদ্ভাবন ও গ্রিন সল্যুশনস এই এক্সপোতে প্রদর্শিত হচ্ছে।  

এবারের এক্সপোটি নেদারল্যান্ডসের আলমেরা শহরের অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় ১৫০ একর জমির ওপর এই এক্সপোর আয়োজন। এক্সপোর ১০১ নম্বর প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশকে। গুরুত্বের দিক দিয়ে আয়োজক দেশ ডাচ প্যাভিলিয়নের পাশের প্যাভিলিয়নটি বাংলাদেশের। এক হাজার বর্গমিটারের প্যাভিলিয়নটি জাতীয় ফুল শাপলার ১৮টি পাপড়ির ওপর দাঁড়ানো একটি প্রাকৃতিক প্যাভিলিয়ন যার বেশিরভাগ পাটের তৈরি পণ্য ও পাটের আঁশ দিয়ে সাজানো। এছাড়াও আছে হর্টিকালচার ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল ডিসপ্লে।

প্রসঙ্গত, নেদারল্যান্ডসে ৭ম আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সিবিশনে (ফ্লোরিয়েড এক্সপো-২০২২) সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ। ছয় মাসব্যাপী এই এক্সপো শুরু হয়েছে গত ১৪ এপ্রিল। চলবে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত। বাংলাদেশসহ ৩২টি দেশ অফিসিয়াল পার্টনার হিসাবে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
জিসিজি/আরআইএস