ঢাকা: জাটকা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে অতিরিক্ত ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এ জন্য জাটকা রক্ষায় সবাইকে যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) আয়োজিত ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে সহনশীল আহরণ ও জাটকা সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক কর্মশালায় এ আহ্বান জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।

বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন। সরকার গৃহীত ব্যবস্থাপনা কৌশল সঠিকভাবে বাস্তবায়নের ফলে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে জাটকা ও প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণ এবং অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে ইলিশের আকার অনেক সুষম হয়েছে। বাজারে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ প্রায় সব সময়ই পাওয়া যাচ্ছে। অতীতে পাওয়া না গেলেও এখন শীতকালেও ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে বিপুল পরিমাণ ইলিশ উৎপাদন এমনকি শীত মৌসুমেও ইলিশ প্রাপ্তির সুযোগ আমাদের হয়েছে।

কিছু দুষ্টু প্রকৃতির লোক কোনো না কোনোভাবে জাটকা নিধনে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে উল্লেখ করে শ ম রেজাউল করিম বলেন, জাটকা আহরণে বিরত থাকতে তাদের উদ্বুদ্ধ করা, সামাজিকভাবে তাদের বোঝানো এবং অসহায় ও দরিদ্র জেলেদের যাতে তারা ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’ এ মন্ত্রে আমরা সাধারণ মানুষকে বোঝানো ও উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।

মন্ত্রী বলেন, ইলিশের ৬টি অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম ও এর যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চতের বিষয়গুলো সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে সরকার নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। ইলিশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা এবং ইলিশ গবেষণার বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। জাটকা সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, ইলিশের সহনীয় আহরণসহ অপরাপর কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামীতে ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা হবে।

বিএআরআই এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএফআরআই ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. নিয়ামুল নাসের ও মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহা. আতাউর রহমান খাঁন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েত হুসেনসহ মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর ও বিএফআরআই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ