ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাকে মারধর করে ঘর ছাড়া করলো ছেলেরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
মাকে মারধর করে ঘর ছাড়া করলো ছেলেরা

নাটোর: অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে গোপনে সব জমি রেজিস্ট্রি করার পাঁয়তারা করছিলো চার ছেলে। বিষয়টি টের পেয়ে বৃদ্ধা মা তাতে বাধা দেন।

আর এ কারণেই সেই বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন ছেলেরা। এমনকি তার ব্যবহৃত ঘরের লেপ-তোষকও বাইরে ফেলে দেওয়াসহ তিনবোনকেও কয়েক দফায় মারধর করা হয়েছে।  

এমন ঘটনা ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কুরশাইট গ্রামে। এ ঘটনায় বৃদ্ধা মা মোমেনা বেগম বাদি হয়ে শনিবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় বড়াইগ্রাম থানায় ওই চার ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনা তদন্তে ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে মাঠে নেমেছেন। মমেনা বেগম উপজেলার কুরশাইট গ্রামের ওয়াজেদ আলী মালিথার স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, উপজেলার কুরশাইট গ্রামের ওয়াজেদ আলী মালিথা বেশকিছুদিন ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশয়ী আছেন। গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) চার ছেলে মোতলেব, মহিনুর, মোতালেব ও মোতাজ্জাহান নাটোরে চিকিৎসা করানোর কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু তারা বাবাকে নাটোরে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে বড়াইগ্রামের লক্ষ্মীকোল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যান। এসময় তারা তাদের তিন বোনকে বঞ্চিত করে বাবার সম্পূর্ণ জমি নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করার পাঁয়তারা করতে থাকেন।

বিষয়টি জানতে পরে তাদের তিনবোন সেখানে উপস্থিত হয়ে তাতে বাধা দেন। এ সময় মা মমেনা বেগমও মেয়েদের বঞ্চিত করার প্রতিবাদ করেন এবং স্বামীকে জমি রেজিস্ট্রি করতে বাধা দেন। এতে ছেলেদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এক পর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বোনদের রেজিস্ট্রি অফিসেই মারধর শুরু করেন। এসময় স্থানীয় লোকজন উপস্থিত হলে তারা দ্রুত সটকে পড়েন। পরে শুক্রবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে তিন বোন তাদের মা-বাবাকে দেখতে কুরশাইট গ্রামের তাদের বাবার বাড়িতে যান। এসময় চার ভাই মিলে আবারও তাদের পুনরায় মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। একই সময় তারা মাকেও বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং তার ব্যবহৃত লেপ-তোষক বাড়ির আঙিনার বাইরে নিয়ে ফেলে দেন। বর্তমানে মা মমেনা বেগম থানাইখাড়া গ্রামে মেয়ে জামাই মোক্তার মণ্ডলের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।  

এ ব্যাপারে ছেলে মহিনুর মালিথা ও মোতালেব হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে প্রথমে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে তারা জানান, কিছু জমি রেজিস্ট্রি করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বোনরা না বুঝে তাতে বাধা দেওয়ায় জমি রেজিস্ট্রি করা যায়নি। মা-বোনদের মারধর ও বাড়ি থেকে বের করা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাননি।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সিদ্দিক বাংলানিউজকে জানান, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ইতোমধ্যে পুলিশ মাঠে নেমেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।