বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও শ্রম কমিশনের সদস্য তাসলিমা আখতার বলেছেন, ঢাকার মিরপুরে সাম্প্রতিক আগুনের ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু একটা কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের নজির। আবাসিক এলাকায় কারখানা, রাসায়নিক গুদামসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনার কারণে অতীতেও বিপুল সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং সবসময়ই এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের কর্মজীবীরা।
এই সঙ্কট সমাধানে কর্তৃপক্ষগুলো যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এমন কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলেছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগে ‘শ্রমিকের প্রাণ ও স্বপ্ন হত্যার প্রতিবাদে’ বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
গত ১৪ অক্টোবর ঢাকার মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পাঁচ তলা একটি পোশাক কারখানা এবং এর লাগোয়া একটি রাসায়নিকের গুদামে আগুন লাগে। এ ঘটনায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আগুনে পুড়েছেন আরও অনেকে।
এই কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তাসলিমা আখতার আরও বলেন, ২০২৪-এর ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পরেও এমন ঘটনা ঘটতে থাকা নিতান্ত হতাশাজনক। মিরপুরের এই সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পেছনে দায়ীদের দ্রুত চিহ্নিত করে তদন্ত ও বিচারের পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরী বলেন, বার বার কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শ্রমিক পরিবারগুলো কেবল শোক-বার্তা আর ক্ষতিপূরণ চায় না, তারা ন্যায়বিচার চায়। এবং এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যেন বন্ধ হয়, তেমন সংস্কার চায়। সেটি নিশ্চিত করাই হবে শ্রমিকদের জন্য ‘নতুন বন্দোবস্ত’।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, শিল্পী কৃষ্ণকলি ইসলাম, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সংগঠক কায়সারী প্রধান কেকা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসুসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিল্পী, অ্যাক্টিভিস্ট এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগ সংলগ্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
এনডি/এমজেএফ