ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২, ২৬ জুন ২০২৫, ০০ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

এনসিসির পরিবর্তে নতুন প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নিয়ে ঐকমত্য হয়নি: আলী রীয়াজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪০, জুন ২৫, ২০২৫
এনসিসির পরিবর্তে নতুন প্রস্তাব, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল নিয়ে ঐকমত্য হয়নি: আলী রীয়াজ কথা বলছেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ/ ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) পরিবর্তে নতুন কমিটির নাম প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল ১০ বছর ঐকমত্য পৌঁছানো যায়নি বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

 

বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।

আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সর্বশেষ বলা হয়েছে, সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কোনো ধরনের কমিশন বা কমিটি তৈরি করা হয় তাহলে তারা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল ১০ বছর তা আবার বিবেচনা করা হবে। এ আলোচনা আমরা কোনোরকম ঐকমত্য পৌঁছাতে পারিনি। সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কমিটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। সবশেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের মেয়াদকাল নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে সেখানে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল স্বাগত জানিয়েছে। আমরা আশাবাদী আলোচনায় আমরা সবাই একমত হতে পারবো।

এনসিসির পরিবর্তে নতুন কমিটির নামের প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন দলের সাথে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এনসিসির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এনসিসির পরিবর্তে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন থেকে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটির নাম বলা হয়েছে। এখানে তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। এনসিসি যেসব নিয়োগের কথা বলা হয়েছে অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ ও তিন বাহিনীর প্রধানের নিয়োগের কথা বলা হয়েছে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে সাংবিধানিক সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়োগ দেবে। তৃতীয় যে, পরিবর্তন এনসিসি থেকে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে করা হয়েছে কাঠামোগত কারা সদস্য হবেন তা পরিবর্তন আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী-নিম্নকক্ষের স্পিকার, উচ্চকক্ষের স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা অন্যান্য বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধি রাষ্ট্রপতি একজন প্রতিনিধি যিনি আইনের ধারা বিবেচিত হবেন এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি সদস্য হবেন।

এর আগে এনসিসিতে প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতির কথা বলা হয়েছে সেক্ষেত্রে এটি থাকছে না। এই প্রস্তাবের ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। আলোচনা শেষে যেটা লক্ষ্য করা গেছে দল থেকে এটিকে স্বাগত জানানো হয়েছে। কিছু কিছু এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।

এদিকে কমিশন সূত্রে জানা যায় বিএনপি, বিলডিপি, এনডিএম, ও লেবার পার্টি এ বিষয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছে। তবে দল থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে তারা এখানে আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে। যেমন এই কমিটির কার্যক্রম কিভাবে কার্যপরিধি কি হবে এর জবাবদিহিতার ব্যবস্থা কি হবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া কি হবে পরামর্শ দিয়েছে। ঐকমত্য কমিশন বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আগামী সপ্তাহে একটি প্রস্তাব পেশ করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি অটুট রাখার বিষয়ে কয়েকটি দল মতামত দিয়েছে আবার কয়েকটি দল ভিন্ন মতামত দিয়েছে। ফলে পিসি এখন পর্যন্ত কোনো ঐকমত্য তৈরি হয়নি। তবে সাম্য মানবিক মর্যাদা, গণতন্ত্র, সামাজিক সুবিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্প্রীতি এবং পক্ষপাতহীনতা এই পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করার পক্ষে অধিকাংশ দলের সম্মতি রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এ বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে পেশ করবে।

ইএসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।