ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৯ মে ২০২৫, ০১ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

এ রায়ের মাধ্যমে সিন্ডিকেটেড ইনজাস্টিজের অবসান হয়েছে: শিশির মনির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৩১, মে ২৭, ২০২৫
এ রায়ের মাধ্যমে সিন্ডিকেটেড ইনজাস্টিজের অবসান হয়েছে: শিশির মনির

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ রায়ের মাধ্যমে সিন্ডিকেটেড ইনজাস্টিজের অবসান হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এ টি এম আজহারুল ইসলামের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রায় ঘোষণার পর হাইকোর্টের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ রায়ের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে শিশির মনির বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ টি এম আজহারুল ইসলামকে সব অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন। আজকে এখন থেকে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ইন এন ইনোসেন্ট ম্যান। এ রায়ের মাধ্যমে আমরা মনে করি, সত্য জয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাজিত হয়েছে।

তিনি বলেন, জামায়াত এবং বিএনপির ছয়জন শীর্ষস্থানীয় নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। অন্তত পাঁচজন জেলেই মৃত্যুবরণ করেছেন। দুনিয়ার ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন নির্যাতনের শামিল। এ টি এম আজহারুল ইসলাম সৌভাগ্যবান। তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমরা মনে করি, এ রায়ের মাধ্যমে সিন্ডিকেটেড ইনজাস্টিজের অবসান হয়েছে। আমরা এটাও মনে করি, এ রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আদালতের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে।

আদালত রায়ে চারটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রথমটি বলেছেন, অতীতের রায়ে বাংলাদেশসহ এ ভারতীয় সাবকন্টিনেন্টের ক্রিমিনাল বিচার ব্যবস্থার পদ্ধতি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছিল। এটা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল। আরও বলেছেন, আদালতের সামনে উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ অ্যাসেসমেন্ট করা ছাড়াই এ টি এম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছিল। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বিচারের নামে অবিচার। আরও বলেছেন, যে সব তথ্য-প্রমাণ আদালতে হাজির করা হয়েছিল, অতীতের আপিল বিভাগ তা সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে আজকে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা হয়ে থাকবে। এরই মাধ্যমে আমরা মনে করি, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সত্য বিজয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাজিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা একটি শর্ট অর্ডার চেয়েছি। অ্যাডভান্স অর্ডার চেয়েছি। এ অ্যাডভান্স অর্ডারটি আদালত মঞ্জুর করেছেন। আদালত বলেছেন, আমরা চেষ্টা করবো, আজকে এবং কালকের মধ্যে শর্ট অর্ডারটি প্রসেস হয়ে এ টি এম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পেতে পারেন, সেজন্য সব আইনি ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।

তিনি আরও বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে আগের রায়ের যেসব ফাইন্ডিং ছিল, মিথ্যা সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে যেসব সাজা দেওয়া হয়েছিল, সবই আজ অসত্য প্রমাণিত হলো এবং তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হলো। আমরা মনে করি, পূর্ণাঙ্গ রায় বের হয়ে যাওয়ার পর অতীতের রায় সম্পর্কে এ রায়ের অনেক পর্যবেক্ষণ থাকবে। আমরা মনে করি, সরকারের উচিত হবে, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার পরে একটি রিভিউ বোর্ড গঠন করে অতীতের রায়গুলোকে পুনর্বিবেচনা করা। যাতে মৃত্যু পরবর্তীতে হলেও যাদের সঙ্গে অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে, তাদের পরিবার, দল এবং এদেশের মানুষ ন্যায়বিচার পেতে পারে।

এর আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দেন।

এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।