ঢাকা, বুধবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২১ মে ২০২৫, ২৩ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:২১, মে ২১, ২০২৫
শফিউল আলম প্রধানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ শফিউল আলম প্রধান

ঢাকা: জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, আধিপত্যবাদবিরোধী অগ্নিপুরুষ মজলুম জননেতা শফিউল আলম প্রধান-এর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী বুধবার (২১ মে)।  

২০১৭ সালের এদিনে ঢাকার আসাদগেটে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন।

৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী বুধবার শফিউল আলম প্রধান-এর সংগ্রামী জীবনের চিত্র প্রদর্শনী ও স্মরণ সভার আয়োজন করেছে জাগপা।

শফিউল আলম প্রধান-এর স্মরণ সভা জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়াম হলে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটানা চলবে বলে জানিয়েছেন জাগপা সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।  

শফিউল আলম প্রধান-এর জন্ম ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় টোকরাভাষা গ্রামের প্রধান পাড়ায়। তার বাবা মৌলভী গমির উদ্দিন প্রধান অবিভক্ত পাকিস্তান মুসলিম লীগের সভাপতি ও পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার ছিলেন।  

শফিউল আলম প্রধান-এর শিক্ষা জীবন কেটেছে সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়, বোরহান উদ্দিন কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলেজ ছাত্র সংসদের সতন্ত্র জিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সলিমুল্লাহ হলের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। ১৯৬৯ গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল আলম প্রধান।  

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ দিনাজপুর কোতয়ালি থানায় পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে পরাধীন বাংলার দিনাজপুরে স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক, সাংঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৩০ মার্চ ১৯৭৪ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজ দল আওয়ামী লীগের ৬৪ জন দুর্নীতিবাজের তালিকা (শ্বেতপত্র) প্রকাশ করেন শফিউল আলম প্রধান। শ্বেতপত্র প্রকাশের মাত্র ৫ দিনের মাথায় ৪ এপ্রিল ১৯৭৪ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রহস্যজনক ৭ খুন হয়। বাকশালী কায়দায় প্রধানকে প্রথমে রাষ্ট্রীয় গুম ও পরে ৭ খুনের দায়ে প্রধান আসামি করা হয়। ১৯৭৫ সালে তড়িঘড়ি করে বিচারকার্য সম্পাদন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাকে।  

বাকশাল পতনে ক্ষমতার পট পরিবর্তনে মামলার পুনঃতদন্তে আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে ৪ বছর পর ১৯৭৮ সালে মুক্তিলাভ করেন তিনি। ১৯৮০ সালের ৬ এপ্রিল ঢাকার রমনা গ্রিন চত্বরে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- (জাগপা) প্রতিষ্ঠা করেন শফিউল আলম প্রধান। জাগপার ব্যানারে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ও বেরুবাড়ী লংমার্চ, দিনাজপুরে ইয়াসমিন হত্যা, ভারতীয় অপসংস্কৃতিবিরোধী, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে টিপাইমুখ বাঁধবিরোধী আন্দোলন করেন তিনি। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে স্বেচ্ছায় কারাবরণ, ফেলানি হত্যাসহ সীমান্ত হত্যাবিরোধী আন্দোলন, পিলখানা গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার ও শহীদ সেনা দিবসের দাবিতে আন্দোলন, ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার প্রতিবাদে এবং সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতির প্রতিবাদে আন্দোলন করেন তিনি।  

কারাগার ছিল শফিউল আলম প্রধান-এর দ্বিতীয় বাড়ি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের সব সরকারের আমলে কারাগারে থাকতে হয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শফিউল আলম প্রধানকে। সর্বমোট ২৭ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।

টিএ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।