ঢাকা, সোমবার, ৩ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ জুন ২০২৪, ০৯ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

২৬ হাজার নারীকে স্বাবলম্বী করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৪ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
২৬ হাজার নারীকে স্বাবলম্বী করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৫০ জন অসচ্ছল নারীকে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন দিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।  

শনিবার (২৫ মে) দুপুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সেখানকার বিভিন্ন গ্রামের বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, শিক্ষার্থীসহ অসহায় নারীদের হাতে এসব সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়।

 

এর আগে বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতিষ্ঠিত সেলাই প্রশিক্ষণকেন্দ্রে প্রায় তিন মাস তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।  

বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ময়নাল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।  

এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. আবুল মনসুর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. দুধ মিয়া, বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান প্রমুখ।  

এ সময় প্রধান অতিথি ইমদাদুল হক মিলন বলেন, এই এলাকার অসচ্ছল নারীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালু করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেকের হাতে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়ার যে কাজটি বসুন্ধরা গ্রুপ করছে- তা সত্যিই প্রশংসনীয়। যে দেশের নারীরা সামনে এগিয়ে আসবে, সেদেশের কল্যাণ কেউ ঠেকাতে পারে না। নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই কাজটি নিয়মিত করে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ।  

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সারাদেশের ২৬ হাজার নারীকে স্বাবলম্বী করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রতি দুই থেকে তিন মাস পর পর নারীদের যে সুদ ও জামানতমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়, এমনটি পৃথিবীর কোথাও নেই। অনেকে এই ঋণ পেয়ে নিজেদের পরিবারকে সচ্ছল করতে সক্ষম হয়েছেন।

বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় দেশব্যাপী অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের দিকনির্দেশনায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ূবপুর ও ছয়ফুল্লাকান্দিতে দুইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমরা এই সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলছি।  

সেলাই মেশিন নিতে আসা ছয়ফুল্লাহকান্দি গ্রামের ফিরোজা বেগম বলেন, স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছে ১৩ বছর আগে। দুই মেয়েকে নিয়ে ঠাঁই হয় বাবার বাড়িতে। মাথা গোঁজার ব্যবস্থা হলেও সংসার চালাতে অনেকটা হিমশিম খেতে হয়। অন্যের বাড়িতে কাজ ও আশপাশের মানুষের সহযোগিতায় কোনোভাবে দিন চলছে। বসুন্ধরা গ্রুপের মাধ্যমে সেলাই মেশিন পেয়েছি। এর মাধ্যমে কিছুটা বাড়তি আয় হবে।  

উপজেলার পাহাতলি গ্রামের বাসিন্দা বিবি আক্তা বলেন, স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সাত বছর আগে। একমাত্র মেয়েকে নিয়েই সংসার জীবন। বসুন্ধরার মাধ্যমে সেলাই মেশিন পাওয়ায় মা-মেয়ে দুজনেরই উপকারে আসবে। মানুষের জামা-কাপড় সেলাই করে টাকা উপার্জন করতে পারব। আবার নিজেদেরটাও করতে পারব।  

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী মেহনাজ আক্তার বলেন, মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন দেখছি আমি। কিন্তু আমাদের অভাবের সংসার। এ অবস্থায় একটা সেলাই মেশিন দিয়ে কিছুটা বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দিল বসুন্ধরা গ্রুপ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।