ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধের অজানা তথ্য নিয়ে গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
মুক্তিযুদ্ধের অজানা তথ্য নিয়ে গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ

ঢাকা: রণাঙ্গনের জনযোদ্ধাদের সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের অপ্রকাশিত তথ্য নিয়ে ‘স্বাধীনতা ৭১: মুক্তিযুদ্ধে জনযোদ্ধা’ নামে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটির লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব.) আবদুর রউফ, বীর বিক্রম।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বইটি নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে প্রকাশনী সংস্থা স্টুডেন্ট ওয়েজ।

নিজের লেখা বই নিয়ে আবদুর রউফ বলেন, জনযুদ্ধের যোদ্ধাদের সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের অপ্রকাশিত তথ্য নিয়ে বই প্রকাশিত হয়েছে, বিভিন্ন ভাষায় তৈরি হচ্ছে ডকু ফিল্ম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের জনযোদ্ধাদের সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের অপ্রকাশিত তথ্যসামগ্রী নিয়ে ‘স্বাধীনতা ৭১: মুক্তিযুদ্ধে জনযোদ্ধা’ নামে একটি গবেষণা গ্রন্থ লেখা সম্পন্ন করেছি। আমার প্রকাশিত বইয়ে তৃণমূলের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন বিভিন্ন অপ্রকাশিত তথ্য, স্মৃতিচারণা তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মাঠ পর্যায়ের প্রকৃত চিত্র নতুন প্রজন্মের কাছে সবিস্তারে সহজবোধ্যভাবে উপস্থান করেছি।

তিনি বলেন, বইটি খুব শিগগিরই ইংরেজিসহ আরও বেশ কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করে পৃথিবীর বিভিন্ন নামকরা বইমেলা ও বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা লাইব্রেরিতে গবেষণা সহযোগী হিসেবে পাঠানোর আয়োজন চলছে। এই বিষয়ে আরও বেশ কয়েকজন বিখ্যাত লেখক, প্রকাশক ও গবেষকরা কাজ করছেন। যার মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সংগ্রামী ইতিহাসকে মাঠের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জবানিতে সত্য তথ্য হিসেবে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

লেখক আবদুর রউফ আরও বলেন, বইয়ে প্রকাশিত তথ্যগুলোকে জীবন্ত হিসেবে তুলে ধরতে ভিজ্যুয়াল ডকুমেন্টারি নির্মাণেরও কাজ চলছে। যেখানে জনযোদ্ধাদের জবানিতেই নতুন প্রজন্ম ও বিদেশিরা জানবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিতেও বইটির প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় লেখক আবদুর রউফ মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। ৯ অক্টোবর সেনাবাহীনিতে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে কমিশন এবং ৫ নম্বর সেক্টরে পাইওনিয়ার কোম্পানি নামে জনযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার নিযুক্ত হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

বইটি প্রধানমন্ত্রীকে উৎসর্গ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীকে বই উৎসর্গ করিনি। আমার সবচেয়ে বড় অর্জন আমি একজন জাতীয় বীর। আর এটাই আমার রাজনীতি।

প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি তিনটি দাবি উল্লেখ করেন আবদুর রউফ। দাবি তিনটি হলো—শ্রীপুর, রনশী, চাঁদপুর, এবং বুরকীতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ; যুদ্ধস্থানের স্মৃতিফলক নির্মাণ ও বুরকীর যুদ্ধে শহীদ আবদুল লতিফের কবর পাকা করে স্থায়ীভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা।

বইটির প্রকাশক প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্ট ওয়েজের কর্ণধার মোহাম্মদ মাশফিকউল্লাহ বলেন, বইটি শতভাগ সত্য ঘটনা ও তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রচিত। লেখক আবেগ, অনুরাগ-বিরাগ পরিহার করে নির্মোহভাবে বইটি রচনা করেছেন।  আমাদের লক্ষ্য বাংলাসাহিত্যের সৃজনশীল গ্রন্থ প্রকাশের পাশাপাশি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ওপর গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ করা।

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জে আবদুর রউফের নেতৃত্বে পাইওনিয়ার কোম্পানি (ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক দ্বারা গঠিত) ৩টি পরিকল্পিত গেরিলাযুদ্ধে অংশ নেয় এবং বিজয় লাভ করে। মূলত এই ৩টি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী জনযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা এবং সংশ্লিষ্ট সবার অবদান নিয়েই বইটি রচিত হয়েছে বলে জানান বইটির লেখক বীর বিক্রম আবদুর রউফ।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব.) আবদুর রউফ বীর বিক্রম। বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান খান বীর প্রতীক, প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার স্টুডেন্ট ওয়েজের স্বত্বাধিকারী মাশফিক উল্লাহ তন্ময় প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
ইএসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।