ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাটুরিয়ায় রাস্তার বেহাল দশা, দুর্ভোগ চরমে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২২
সাটুরিয়ায় রাস্তার বেহাল দশা, দুর্ভোগ চরমে

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার নয়াডিঙ্গি থেকে ধূল্লা পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আঞ্চলিক সড়কের ৫ কিলোমিটারের প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।  

উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা গড়ে উঠেছে।

এই সকল পোশাক কারখানার শ্রমিক ও তাদের কর্মী পরিবহণের জন্য প্রতিনিয়ত যানবাহন গুলোকে এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়। রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়াতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষকে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলার সঙ্গে দ্রুত সংযোগ রাখতে ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে প্রথম ধূল্লা থেকে খনিরট্যাগ এই দুই কিলোমিটার রাস্তা পাকা করণ করা হয়।  বেশ কয়েক বছর পর ২০০৫ সালে বাকি তিন কিলোমিটার রাস্তা (ধূল্লা থেকে নয়াডিঙ্গি)  পর্যন্ত রাস্তা পাকা করুণ করে এলজিইডি বিভাগ। সাটুরিয়া উপজেলার ধূল্লা-নয়াডিঙ্গি সড়কের এলজিইডি বিভাগ থেকে রাস্তাটির নাম্বার ফেলা হয় ৩৫৬৭০৩০০১।  

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ব্যস্ততম রাস্তা মধ্যে অন্যতম হলো ধূল্লা-নয়াডিঙ্গি আঞ্চলিক সড়ক। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ তাদের নানা প্রয়োজনে উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন কাজে সাটুরিয়াতে যাতায়াত করে থাকে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ধানকোড়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে যাওয়াতে বেশ কিছু বড় বড় পোশাক কারখানা গড়ে উঠেছে এই অঞ্চলে। জীবন জীবিকার তাগিদে কর্মজীবী মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাজের সন্ধানে আসে এ এলাকায়। এ রাস্তাটি এলজিইডি বিভাগ থেকে পাকা করণের পর কয়েকবার নামমাত্র মেরামত করলেও রাস্তাটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।  

গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের নামমাত্র পূন-মেরামত করে এলজিডি বিভাগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে মেরামত করায় রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে দেখা দেয় ফাটল ও বড় বড় ভাঙ্গন। চলতি অর্থ-বছরে রাস্তাটি মেরামতের জন্য টেন্ডার হলেও বড় বড় খানাখন্দের মেরামতের কোন চিহ্নের দেখা মিলে নি।  

উপজেলা এলজিইডি বিভাগ বলছেন, ধূল্লা থেকে খনিরট্যাগ মোড় পর্যন্ত পূন: মেরামতের কাজ এসেছে। তারা আরও বলেন, এ বছর না করতে পারলেও সামনে অর্থ-বছরে বাকি অংশের কাজ হতে পারে।  

উপজেলার নয়াডিঙ্গি-গোলাতে অবস্থিত পোশাক কারখানা তারাসীমা অ্যাপারেল্স লিমিটেডের এক কর্মী জাহিদুর রহমান বলেন,আমার বাড়ী কুষ্টিয়া জেলায়, আমি এই অঞ্চলে প্রায় ৪ বছর যাবত কাজের তাগিদে এই এলাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বাসা ভাড়া থাকছি। প্রতিদিন সকালে অফিসে যাই আর সন্ধার দিকে বাসায় আসি কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে যাই। রাস্তা দিয়ে যানবাহন-তো দুরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচল করাটাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে।  

নয়াডিঙ্গি -দোতরা এলাকায় আরও এক শিল্প প্রতিষ্ঠান রাইজিং স্পিনিং মিলের শ্রমিক রাজ্জাক মিয়া বলেন, আমাদের তিন সিফট করে ডিউটি করতে হয়, অনেক সময় রাতেও কাজের জন্য কারখানায় যেতে হয়। বাসা থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার সময় কোন রিক্সায় যেতে পারি না কারণ ভয় করে কখন যেন দুর্ঘটনা ঘটে। এই ব্যস্ততম রাস্তাটি অতি দ্রুত সময়ে সংস্কার না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।  

নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, রাস্তাটি মূলত নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে করার কারণেই আজ রাস্তার এই বেহাল অবস্থা। রাস্তা নষ্ট হওয়ার আরও বড় একটি কারণ হলো, ধারণ ক্ষমতার অধিক লোডেট যানবাহন চলাচলের জন্যই নষ্ট হচ্ছে। রাতের আধারে ১৫ থেকে ২০ টন বা তারো অধিক ওজনের ড্রামট্রাক ও বালু ভর্তি যানবাহন চলাচলে রাস্তাটি দ্রুত নষ্ট হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

সাটুরিয়া উপজেলা স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল করিম বলেন, ধূল্লা-নয়াডিঙ্গি এই রাস্তাটির দুই কিলোমিটার রাস্তার পূন-মেরামতের জন্য টেন্ডার হয়েছে। ধূল্লা খনিরট্যাগ এই রাস্তার কাজটি আগে মেরামত হবে, আশা করছি সামনে অর্থ বছরে বাকি অংশের কাজের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাবো।  

মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুল হক বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় এই বছর পূন-মেরামতের কাজই বেশি কিন্তু আমাদের ফান্ড সিমিত বিধায় সকল কাজ এক সঙ্গে করা সম্ভব হচ্ছে না। যেহেতু এই রাস্তাটি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূন-মেরামত করতে হবে, সে জন্য আমাদের বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।