ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী নওরিন নুসরাত স্নিগ্ধাকে হত্যার অভিযোগে করা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডিকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
নারাজির আবেদন মঞ্জুর করে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মহিউদ্দীন বলেন, পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বিরুদ্ধে বাদী নারাজির আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
২০২৩ সালের ২১ জুলাই ইব্রাহিমের সঙ্গে ভুক্তভোগী নওরিনের বিয়ে হয়। ইব্রাহিম একটি কোম্পানিতে আশুলিয়ায় চাকরি করেন। নওরিনের মৃত্যুর পর ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালতে নওরিনের বাবা খন্দকার নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নওরিনের স্বামী ইব্রাহিম খলিল ও শাশুড়ি শামসুন্নাহারকে আসামি করা হয়।
গত বছরের ১০ নভেম্বর আদালত মামলাটি তদন্ত করে পুলিশের ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন৷ তবে অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে গত ৩১ মে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক মো. আনিসুর রহমান।
পরে গত ২৫ আগস্ট এ প্রতিবেদনে বিরুদ্ধে বাদীর নারাজী আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
নওরিনের পরিবারের অভিযোগ নওরিন পড়ালেখা করতে চাইলেও তার স্বামী ইব্রাহিম ও শাশুড়ি তাকে আর লেখাপড়া করাতে চায়নি। বিয়ের দুই দিন পর থেকেই নওরিনকে লেখাপড়া না করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। পরে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। তখন স্বামী নওরিনকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। নওরিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় বাবার বাড়িতে যেতে চান। তাকে আটকে রাখা হয়। নওরিন বিষয়টি মোবাইলফোনের মাধ্যমে বাবাকে জানান। ইব্রাহিম তার শ্বশুরকে জানান নওরিনকে বাড়ি যেতে দেওয়া হবে না।
২০২৩ সালের ৮ আগস্ট নওরিনকে বাসায় আটকে রেখে স্বামী বাইরে বের হন। নওরিনের মোবাইলফোন কেড়ে নেন। বাদী ইব্রাহিমকে ফোন করলে তিনি জানান বাসায় ঢোকা যাবে না, তাকে আটকে রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় টাঙ্গাইলের গ্রামের বাড়ি থেকে মেয়েকে দেখার জন্য টাঙ্গাইল থেকে আশুলিয়ার উদ্দেশে আসেন। বিকেলের দিকে ফোন করলে ইব্রাহিম জানান তার মেয়ে ছয়তলা থেকে লাফ দিয়েছেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিকেলে হাসপাতালে পৌঁছে নজরুল তার মেয়ে নওরিনের লাশ দেখতে পান।
কেআই/এএটি