আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় দ্রুত সময়ে আনা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আসামিদের নামে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আজকে আমার সাক্ষ্য দেওয়ার জেরা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছি। এটা অবশ্যই মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে এই অপরাধ লেখা হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, এই মামলায় ব্যক্তি হিসেবে শেখ হাসিনাকে আসামি করে মামলা চলমান। আমি মনে করি এটা শুধু ব্যক্তির সংঘটিত অপরাধ নয় বরং এটা রাজনৈতিক অপরাধ। ফলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। ট্রাইব্যুনালের সে সুযোগ আছে। আমরা আবেদন জানাবো। ট্রাইব্যুনালের কাছে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ এসেছে। শেখ হাসিনা যেহেতু দলীয় প্রধান, রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে জনগণকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জনগণ প্রতিরোধ করে তাকে উৎখাত করেছিলেন। ফলে এটা রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের সংঘটিত অপরাধ। আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় দ্রুত সময়ে আনা উচিত।
আন্দোলনে দেশি-বিদেশি শক্তির ইন্ধন ছিল এমন অভিযোগের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলনে গুলি চালিয়েছে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তার বিরুদ্ধে এক দফা ঘোষণা করে তাকে উৎখাত করার প্রস্তুতি নেওয়া বৈধ। এখানে ষড়যন্ত্রের কিছু নেই। জনগণের পক্ষ থেকে বৈধ ছিল। জনগণের অভ্যুত্থান হিসেবে জুলাই আগস্ট সংঘটিত হয়েছে। এখানে দেশি-বিদেশি শক্তির কোনো ইন্ধন ছিল না। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছিল জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করে সফলতা নিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনাসহ অন্যরা বিচারের মুখোমুখি হতে ভয় পেয়ে তারা দেশত্যাগ করেছে। দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, যার নেতৃত্বে জুলাইয়ে সাধারণ ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন তিনি নাহিদ ইসলাম। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিনি তৃতীয় দিনে এসে তার সাক্ষ্য শেষ করেছেন।
এর আগে বুধবার ও বৃহস্পতিবার জবানবন্দি দেন নাহিদ ইসলাম। এরপর বৃহস্পতিবার তাকে জেরা শুরু করেছিলেন আইনজীবী।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এর আগে ১০ জুলাইয়ে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছেন, তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন>>> ট্রাইব্যুনালে নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন
ইএস/এএটি