ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৬ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

‘ইন্ডিয়া আউট’ থেকে ‘বিশ্বস্ত অংশীদার’!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৪৬, জুলাই ২৬, ২০২৫
‘ইন্ডিয়া আউট’ থেকে ‘বিশ্বস্ত অংশীদার’! ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ। ছবি: ফেসবুক

ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে সম্পর্কে শিথিলতা কেটে উষ্ণতা ফিরতে শুরু করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মালদ্বীপ সফরে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান গবেষণা ও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একাধিক সমঝোতা হয়েছে।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ এক সময় ‘ইন্ডিয়া আউট’ নীতির পক্ষে অবস্থান নিলেও এখন সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। যৌথ বিবৃতিতে উভয় রাষ্ট্রনেতাই একে অপরকে ‘বিশ্বস্ত অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

মালদ্বীপের ৬০তম স্বাধীনতা দিবসে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে মোদীকে আমন্ত্রণ ও তার সফর মালে-দিল্লি সম্পর্কে নতুন দিকনির্দেশ করছে। এরই নজির হিসেবে মালদ্বীপকে চার হাজার ৮৫০ কোটি রুপির ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট দেওয়া হয়েছে, যা প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য ও হাউজিং খাতে ব্যয় হবে। পাশাপাশি ভারত সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর ঋণের শর্ত সহজ করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট মুইজ জানিয়েছেন, মালদ্বীপ এখন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গতিশীল অর্থনীতি গড়ার পথে এবং ভারত সেই যাত্রায় সহায়ক। মোদীও আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, পরিস্থিতি যাই হোক, ভারত-মালদ্বীপের বন্ধুত্ব থাকবে সুদৃঢ়।

সাম্প্রতিক অতীতে এই সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে গেছে। বিশেষত ২০২৩ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হওয়া মুইজ মালদ্বীপের রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দিল্লির হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণায় অংশ নিলে পরিস্থিতি জটিল হয়। এর জেরে ভারতে ‘বয়কট মালদ্বীপ’ ট্রেন্ড দেখা যায়, যার ফলে দ্বীপ রাষ্ট্রটির পর্যটনশিল্পেও ধাক্কা লাগে।  

এমনকি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পুরনো প্রথা ভেঙে প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে চীনকে বেছে নেন মুইজ। ওই সফর থেকে এসে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর মধ্যে নানা বাতাস বয়ে যায়, বদলায় আকাশের রং। নানা সমীকরণে মুইজ ভারত সফর করেন গত বছর। সেখানে তাকে উষ্ণ আতিথেয়তা দেখায় দিল্লির সরকার। এর জবাবে স্বাধীনতা দিবসে মোদীকে আমন্ত্রণ করলো মালদ্বীপ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ এবং চীনের কাছ থেকে আশানুরূপ সুবিধা না পাওয়ায় মুইজ সরকারের অবস্থান বদলেছে। অপরদিকে, ভারতও ‘নেইবার ফার্স্ট’ নীতিকে গুরুত্ব দিয়ে মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগী হয়েছে।

চীনের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্ক এই সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ হলেও ভূরাজনৈতিক স্বার্থরক্ষায় সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। ভবিষ্যতে এই দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব কোন দিকে এগোয়, তা আন্তর্জাতিক মহলের নজরে থাকবে।

এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।