ঢাকা, সোমবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২, ২৩ জুন ২০২৫, ২৬ জিলহজ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা: যে চার স্থান হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৫৮, জুন ২২, ২০২৫
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা: যে চার স্থান হতে পারে সবচেয়ে নিরাপদ ছবি: সংগৃহীত

ইরানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথা যুক্তরাষ্ট্রের হামলা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এমন সময় বিশ্বজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে—তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা?

তবে যুদ্ধ লাগলে সবাই কি নিরাপদ আশ্রয় পাবে? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পৃথিবীর কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চল তুলনামূলকভাবে নিরাপদ থাকতে পারে।

নিচে এমন চারটি জায়গার কথা তুলে ধরা হলো, যেখানে লুকিয়ে থাকা যেতে পারে যদি বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বেধে যায়—এর একটি রয়েছে ব্রিটেনেই।

উড নর্টন, ওরচেস্টারশায়ার, যুক্তরাজ্য

ব্রিটেনের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস অঞ্চলের গভীর বনাঞ্চলে অবস্থিত উড নর্টন। ওপর থেকে কিছুই বোঝা যায় না—শুধু একটা রেডিও মাস্ট আর নিরাপত্তার ব্যানার দেখা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, লন্ডনে যদি কোনো বড় ধরনের হামলা হয়, এমন আশঙ্কায় বিবিসি এই জায়গাটি কিনে নেয়।

বর্তমানে এটি বিবিসির সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে এখান থেকে জরুরি সম্প্রচার চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।

পিএডব্লিউএন (প্রোটেক্টেড এরিয়া উড নর্টন) নামে পরিচিত এই বাঙ্কারে একাধিক তলার গভীর অবকাঠামো রয়েছে। ২০১৬ সালে প্রকাশিত বিবিসি নথি অনুযায়ী, জাতীয় সংকটে এটি ব্যবহৃত হতে পারে। ধারণ ক্ষমতা ৯০ জন, যেখানে ১২ জন সংবাদ সম্পাদক থাকবেন। মজার বিষয়—এখানে একটি পিং-পং টেবিলও আছে!

পিটার্স মাউন্টেন, ভার্জিনিয়া, যুক্তরাষ্ট্র

অ্যাপালাচিয়ান পর্বতমালার গভীরে অবস্থিত পিটার্স মাউন্টেন—আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে 'আমেরিকান টেলিফোন অ্যান্ড টেলিগ্রাফ কোম্পানি' বা এটিঅ্যান্ডটি’র কমিউনিকেশন স্টেশন বলা হয়, তবে বাস্তবে এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গোপন জরুরি বাঙ্কারগুলোর একটি।

২০০৭ সালে ৬১ মিলিয়ন ডলারে আধুনিকীকরণ করা হয় এটি। হামলার সময় এটি হতে পারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিকল্প সদর দফতর।

রেভেন রক মাউন্টেন কমপ্লেক্স, পেনসিলভানিয়া

‘হ্যারি’স হোল’ নামেও পরিচিত এই বাঙ্কারটির নির্মাণ শুরু হয় ১৯৪৮ সালে, চালু হয় ১৯৫৩ সালে। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান এটি অনুমোদন করেন।

গোপন এই বাঙ্কারে রয়েছে ১ লাখ বর্গফুট অফিস স্পেস, ধারণক্ষমতা ১৪ শ জন। বড় বিস্ফোরণের প্রভাব ঠেকাতে আছে ৩৪ টন ওজনের বিস্ফোরণপ্রতিরোধী দরজা।
৯/১১-র পরে এখানে যুক্ত হয়েছে ৬৫২ মিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন কাজ। এখন এর আয়তন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ লাখ বর্গফুট, ধারণক্ষমতা ৩–৫ হাজার।

তবে এখানে পরিবার-পরিজনদের ঢোকার অনুমতি নেই। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানে তারা স্থানটি দেখতে পারেন।

শায়েন মাউন্টেন কমপ্লেক্স, কলোরাডো, যুক্তরাষ্ট্র

নর্থ আমেরিকান অ্যারোস্পেস ডিফেন্স কমান্ড বা NORAD-এর সদর দফতর হিসেবে পরিচিত এই বাঙ্কারটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৫০-এর দশকে, ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কার উদ্বেগের পটভূমিতে।

এখানে রয়েছে জ্বালানি ও পানির বিশাল রিজার্ভার, এমনকি একটি ভূগর্ভস্থ হ্রদও। প্রতিমাসে এখানে ১ হাজার জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। অপারেশনাল খরচ বছরে ২৫ কোটি ডলার।

৯/১১ হামলার পরে আবার সক্রিয় হয় এই বাঙ্কার, এবং ২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসন এটিকে পূর্ণভাবে চালু করে।

বিশ্ব যখন অনিশ্চয়তার দিকে এগোচ্ছে, তখন এই ধরনের বাঙ্কারগুলো হয়তো ধনীদের জীবন রক্ষা করবে। তবে এমন প্রশ্নও উঠছে—এই বাঙ্কারগুলোর বাইরের কোটি কোটি মানুষের কী হবে?

সূত্র: মেট্রো.ইউকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।