জুন মাসের প্রথম দিনেই আসামে শুরু হয়েছে প্রবল বৃষ্টিপাত। রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শিলচরে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ৪১৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, উপরিভাগের ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপের ধারা মিলে এই অস্থির আবহাওয়ার সৃষ্টি করছে। মধ্য আসাম থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত এক শক্তিশালী বৃষ্টিপাতের অঞ্চল গঠিত হয়েছে, যা পূর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে বিস্তৃত একটি নিম্নচাপ রেখার সঙ্গে যুক্ত।
২০২২ সালে বেথকুন্ডিতে বরাক নদীর ওপর নির্মিত একটি বাঁধ ভেঙে গেলে শিলচর ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়ে। বাঁধটি শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাঁধ ভাঙার পর শিলচর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকাই পানির নিচে চলে যায়।
গত তিন দিনে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, মণিপুর, ত্রিপুরা, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৩৪ জনের প্রাণ গেছে। মিজোরামে ৩১ মে দিনে স্বাভাবিকের তুলনায় ১ হাজার ১০২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
২৮ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত মেঘালয়ে টানা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ছিল চেরাপুঞ্জি (সোহরা) ও মৌসিনরামে। এই পাঁচ দিনে যথাক্রমে ৭৯৬ মিলিমিটার ও ৭৭৪.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে এই দুই স্থানে।
চেরাপুঞ্জির রামকৃষ্ণ মিশন, খ্লিয়েহরিয়াত এবং পাইনুরসলাসহ মেঘালয়ের আরও কয়েকটি এলাকায় গত পাঁচ দিনে ৫০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ৩০ মে দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় চেরাপুঞ্জির রামকৃষ্ণ মিশন এলাকা। সেখানে মাত্র এক দিনেই ৩৭৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পাঁচ দিনে সেখানে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৯৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার।
একই দিনে মৌসিনরাম ও পাইনুরসলায়ও ২৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। মেঘালয়ে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ১০টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রিপুরায় ফ্ল্যাশ ফ্লাড বা আকস্মিক বন্যায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মণিপুরে নদীর পানি উপচে পড়া এবং বাঁধ ভেঙে পড়ার কারণে ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তিন হাজার ৩৬৫টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরএইচ