ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

কল ড্রপের অবস্থা জানতে চেয়ে বিটিআরসির চিঠি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
কল ড্রপের অবস্থা জানতে চেয়ে বিটিআরসির চিঠি

ঢাকা: মোবাইল ফোন অপারেটরদের প্রকৃত কল ড্রপের অবস্থা এবং এ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিটিআরসি।

জাতীয় সংসদ অধিবেশনে একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের বিরুদ্ধে কল ড্রপ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যের একদিন পর এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

রোববার (২১ অক্টোবর) রাতে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বাণিজ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গ্রামীণফোন ব্যবসার জন্য কলড্রপ করে।

একটা কলে ৪ থেকে ৫ বার ড্রপ হয়, এটা বাস্তবসম্মত না। এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

গ্রামীণফোনের ‘কলড্রপ’ নিয়ে সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছি হঠাৎ কলড্রপ। এছাড়া আমাদের রোমিং করা সিম দেখা যায় বিদেশে একটা ফোন করলে হঠাৎ কল ড্রপ।

বিষয়টি গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষসহ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে দেখার জন্য অনুরোধ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

পরদিন সোমবার (২২ অক্টোবর) এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে অপারেটরদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের পরিচালক মো. গোলাম রাজ্জাক স্বাক্ষরিত অপারেটরদের প্রধানদের ‘কল ড্রপের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রাহক অসন্তুষ্টি প্রসঙ্গে’ চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল অপরেটরদের কল ড্রপ সংক্রান্ত অভিযোগ অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে চলমান জাতীয় সংসদেও আলোচনা হয়েছে। দিন দিন টেলিযোগাযোগ সেবার মান নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেবার মান নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে বিটিআরসির একটি অগ্রাধিকারযোগ্য কার্যক্রম। বিটিআরসি ইতোমধ্যে ড্রাইভ টেস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন অপারেটরের সেবার মান নিয়মিত পরিমাপ করছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, গ্রাহক স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কল ড্রপের পরিমাণ বিটিআরসি কর্তৃক নির্ধারিত সীমার (২ শতাংশ) মধ্যে থাকা আবশ্যক। অপারেটর কর্তৃক দাখিলকৃত মাসিক রিপোর্টে তাদের কল ড্রপ নির্ধারিত সীমার মধ্যেই আছে দাবি করলেও সম্প্রতি এ বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে অনেক অভিযোগ আছে। এছাড়াও কোন কোন অপারেটরের নেটওয়ার্কে একটি কলে ৪ থেকে ৫ বার কল ড্রপ হয় বলে অভিযোগ রয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়।

‘এমতাবস্থায়, আপনার নেটওয়ার্কে সাম্প্রতিক প্রকৃত কল ড্রপের অবস্থা এবং এ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে আপনাদের ব্যাখ্যা আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে বিটিআরসি’তে প্রেরণের জেন্য নির্দেশক্রমে বলা হলো। ’

এরআগেও বল ড্রপ নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ৩০ জুন বিটিআরসি অপারেটরদের নির্দেশনা দেয়।

এতে বলা ছিল, কোন মোবাইল সংযোগ হতে দৈনিক একের অধিক প্রতিটি কল ড্রপের জন্য ১ মিনিট টকটাইম গ্রাহককে ফেরত দিতে হবে এবং তা এসএমএসের মাধ্যমে তাকে জানাতে হবে।

প্রচলিত নিয়মানুসারে কল ড্রপের জন্য ফেরতকৃত টক টাইমের ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ ১০ সেকেন্ড পালস প্রযোজ্য হবে এবং এর মেয়াদকাল কমপক্ষে ১ মাস হতে হবে।

অন নেট এবং অফ নেট উভয় ক্ষেত্রেই কল অরিজিনেটিং মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রাহককে ওই টক টাইম ফেরত দিতে হবে। তবে অফনেট কলের ক্ষেত্রে পরবর্তী অপারেটরদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

বিটিআরসির তথ্যানুযায়ী, দেশে বর্তমানে চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৫ কোটি ৪১ লাখ ৭৯ হাজার।

গত ১৩ আগস্ট মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রতি মিনিট সর্বোচ্চ ২ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা কলরেট নির্ধারণ করে দেয় বিটিআরসি। আর গত ১ অক্টোবর থেকে চালু হয় এমএনপি সেবা। এতে গ্রাহক পছন্দ মতো অন্য অপারেটরে চলে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।