ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

রোজায় কলকাতার হালিমের স্বাদ নেন সব সম্প্রদায়

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২২
রোজায় কলকাতার হালিমের স্বাদ নেন সব সম্প্রদায়

কলকাতা: পবিত্র রমজান এলে কলকাতার রেস্তোরাঁ থেকে ফুটপাতের খাবারে কিছু বৈচিত্র্য আসে। শহরজুড়ে এমন কিছু খাবারের স্বন্ধান মেলে যা, অন্য সময় খুব একটা মেলে না।

তারমধ্যে অন্যতম হালিম। বিফ, মটন, চিকেন, ভেজ -এই চার ধরনের হালিম কলকাতায় সাধারণত শীতের মৌসুমেই মেলে।

এটা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় নানান ধরনের ডাল এবং চাল। কোথাও আবার চালের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় গম। এসব হালিমের মধ্যে উঁকিঝুকি মারে মাংসের কয়েকটা টুকরো। পরিবেশনের সময় চিকন করে কাটা ধনেপাতা, বেরেস্তা বা কাঁচা পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা এবং লেবুর রস। রমজান এলেই স্বাদ যেন দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

রোজার মাসে শহরে মুসলিমদের পাশাপাশি অন্য সম্প্রাদায়ের লোকেরাও এর স্বাদ নিতে পিছপা হন না। কলকাতার বেগবাগান অঞ্চলের এক মসজিদের কয়েক গজ দূরে বিক্রি হয় ‘চাচার হালিম’। আরশাদ চাচার বয়স হওয়ায় এখন তার দোকান সামলায় পরিবারের সদস্যরা। এখানের হালিম অনেকটা সুপের মত পাতলা।

মাগরিবের নামাজ শেষ হতেই ভিড় বাড়ে আরশাদ চাচার হালিমের দোকানে। অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনও ভিড় করেন সেখানে। কৌশিকের বাড়ি কলকাতার যাদবপুরে। অফিস থেকে ফেরার পথে সেখানে হালিম খেয়ে পরিবারের বাসার জন্য পারসেল নিচ্ছিলেন। এ সময় দাম দেওয়ার সময় বলেই ফেলেন পূজার সময়তো বানাতে পারেন। বিক্রেতা একগাল হাসি দিয়ে বলেন, ‘ফির আনা’ অর্থাৎ আবার আসবেন।

রোজায় কলকাতার ছোট থেকে বড় সব রেস্তোরাঁয় হালিম মেলে। তবে ফুটপাতের স্বাদটা যেন বেশি থাকে। রেস্তোরাঁয় থাকে  নানান পদের মেন্যু। হালিমটা বাড়তি। কিন্তু ফুটপাত বিক্রেতারদের একটাই পদ। আর তা দিয়েই গ্রাহক টানতে হয়। ফলে তাতে দেওয়া হয় বাড়তি ফোকাস। সে কারণে রেস্তোরাঁ আর ফুটপাতে খাবার বিক্রেতারেদের মধ্যে কলকাতার স্ট্রিটফুড অনেটাই এগিয়ে। সে কারণে কলকাতার স্ট্রিটফুড ২০১৮ সালে বিশ্ব স্বীকৃতি লাভ করেছে।

তবে কলকাতার নাখোদা মসজিদ ঘিরে হালিম বিক্রেতার সংখ্যটা বেশি। এখানের হালিমে যোগ হয়, মুগ, মুসুর, বুটের ডাল আর সুগন্ধি চাল। তার সঙ্গে মেশে কয়েক ধরনের মশলা। নাখোদা মসজিদের বিক্রেতাদের হালিম প্রস্তুতি চলে একদিন আগে থেকে। তারা ডাল, চাল আলাদা পাত্রে একদিন আগেই ভিজেয়ে রাখেন। কাঠের পাত্রে আধভাঙা চাল-ডাল আলাদা করে রান্না করা হয়। অনেকটা বিরিয়ানির মতো।

এখানে হালিমের সঙ্গে যুক্ত হয় ‘শাহি’ শব্দটা। অর্থাৎ চিকেন শাহি হালিম, মটন শাহি হালিম, বিফ শাহি হালিম, ইরানি শাহি হালিম, হায়দারবাদি শাহি হালিম, আফগানি শাহি হালিম, লক্ষ্ণৌ স্পেশাল এবং কলকাতা স্পেশাল শাহি হালিম। স্ট্রিটফুডে প্লেটপ্রতি হালিমের দাম ৪০-৬০ রুপি। রেস্তোরাঁয় দাম পড়ে ১৪০ থেকে ২২০ রুপি। দুপুরের পর থেকে পসরা সাজিয়ে বসেন সকলেই। বেলা পড়তেই পার্সেলের ভিড় বাড়ে। আর সেসব পারসেল যুক্ত হয় ইফতারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২২
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।